প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “আমরা কী করলাম বা করলাম না, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তা দিয়ে আমাদের বিচার করবে।”
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে জনপ্রশাসন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন গ্রহণকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, দেশের রাজনৈতিক দল ও অংশীজনদের ঐকমত্যের ভিত্তিতে এসব প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে এবং সেই ভিত্তিতেই সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে। তিনি বলেন, “জাতির জন্য এটি একটি বিরাট সংবাদ। আমি জাতির পক্ষ থেকে সংস্কার কমিশনের দুজন চেয়ারম্যান এবং সব সদস্যকে আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞতা জানাই।”
প্রধান উপদেষ্টা উল্লেখ করেন যে, এই দুটি প্রতিবেদন দেশের প্রতিটি মানুষকে স্পর্শ করবে। তিনি বলেন, “আপনি দরিদ্রতম ব্যক্তি হতে পারেন, ধনী হতে পারেন, মাঝের কেউ হতে পারেন—এই দুটি বিষয় থেকে মুক্তি নেই। এই দুটি বিষয়ে আপনাকে সম্পৃক্ত হতেই হবে।”
তিনি আরও বলেন, “তারা এখানে যে আশার কথা শুনিয়েছেন, তা আমাদেরকে আশাবাদী করে তুলেছে। হয়তো আমরা এই সমস্যাগুলো থেকে মুক্তি পাব এবং প্রকৃত নাগরিক অধিকার ফিরে পাব। এটাই আমাদের প্রত্যাশা।”
ড. ইউনূস জানিয়েছেন, সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জনগণের হাতে, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে এবং সিভিল সোসাইটি অর্গানাইজেশনগুলোর নিকট পৌঁছে দেওয়া হবে, যেন তারা এ বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারে।
তিনি বলেন, “এই প্রতিবেদন যেন সবার হৃদয় স্পর্শ করে, যেন সবাই মনে করে—ঠিক কথা বলা হয়েছে, প্রাণের কথা বলা হয়েছে। কারণ আমরা সবাই কমবেশি ভুক্তভোগী। আমাদের পণ্ডিত হতে হবে না এটি বুঝতে।”
প্রধান উপদেষ্টা সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন ইংরেজিতে অনুবাদ করার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে বলেন, “বিশ্বের দরবারে যেতে হলে আমাদের বৈশ্বিক ভাষায় কথা বলতে হবে। আজ যে দুটি ভলিউম গ্রহণ করেছি, তা জাতির সম্পদ এবং একইসঙ্গে বিশ্বসম্পদ হিসেবে বিবেচিত হবে।”
তিনি আরও বলেন, “কমিশন তাদের প্রজ্ঞা, অভিজ্ঞতা এবং একাডেমিক জ্ঞানের সংমিশ্রণে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল হয়ে থাকবে।”
ড. ইউনূস বলেন, “আমরা কী করেছি, কী করিনি—ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের সেই কাজের মাধ্যমেই বিচার করবে। তারা প্রশ্ন তুলতে পারবে, কেন আমরা সংস্কার বাস্তবায়ন করিনি, যখন সব তথ্য আমাদের সামনে উন্মুক্ত ছিল।”
তিনি আরও বলেন, “এই প্রতিবেদন জাতির জন্য একটি স্মরণীয় বিষয় হয়ে থাকবে। আমাদের করণীয় ঠিক করে দেওয়া হয়েছে, এখন বাস্তবায়নের দায়িত্ব আমাদের।”