ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বৈঠকের পর ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি জানান, মোদি বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে ট্রাম্পকে বিস্তারিত অবহিত করেছেন এবং ভারত এই পরিস্থিতিকে কীভাবে দেখছে, তা ব্যাখ্যা করেছেন।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ছাড়াও আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু আলোচনায় আসে। ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, “প্রধানমন্ত্রী (মোদি) বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে তাঁর উদ্বেগ ট্রাম্পের সামনে তুলে ধরেছেন। ভারত আশা করে যে, বাংলাদেশের পরিস্থিতি এমন দিকে যাবে, যেখানে আমরা তাদের সঙ্গে একটি গঠনমূলক ও স্থিতিশীল উপায়ে সম্পর্ক বজায় রাখতে পারব।”
প্রেস ব্রিফিং চলাকালে এক ভারতীয় সাংবাদিক ট্রাম্পকে প্রশ্ন করেন, “বাংলাদেশ ইস্যুতে আপনি কী বলতে চান? কারণ, আমরা দেখেছি বাইডেন প্রশাসনের সময় মার্কিন ডিপ স্টেট বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে জড়িত ছিল।”
এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, “এখানে ডিপ স্টেটের কোনো ভূমিকা ছিল না। এটা এমন কিছু, যা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রধানমন্ত্রী (নরেন্দ্র মোদি) কাজ করছেন এবং (ভারত) শত শত বছর ধরে কাজ করে আসছে, আমি যতটুকু জানি। সত্যি বলতে, আমি এটি সম্পর্কে পড়ছি কিন্তু আমি বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর (মোদি) ওপর ছেড়ে দেব।”
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যাপক গণবিক্ষোভের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হন এবং ভারতে আশ্রয় নেন। এরপর থেকে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের মধ্যে কিছুটা অবনতি দেখা যায়। ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু, বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা ঠেকাতে ব্যর্থতার অভিযোগ তোলা হয়।
বৈঠকে মূলত ভারত-মার্কিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও জোরদার করার বিষয়ে আলোচনা হয়। এর মধ্যে বাণিজ্য, শুল্ক, অভিবাসন, বিদেশি বিনিয়োগ, জ্বালানি, প্রতিরক্ষা, প্রযুক্তি ও ভিসা সংক্রান্ত বিষয়গুলো গুরুত্ব পায়।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই বৈঠকের মাধ্যমে ভারত-মার্কিন সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তবে বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের অবস্থান কেমন হবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।