
খুলনায় সংবাদ সংগ্রহের সময় দুর্বৃত্তদের হামলার শিকার হয়েছেন দুই সাংবাদিক। আহত হয়েছেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সহকারী মহাসচিব ও খুলনা প্রেসক্লাবের সদস্য এবং আমার দেশ খুলনা ব্যুরো প্রধান এহতেশামুল হক শাওন এবং একই পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ ও দৈনিক প্রবাহের মফস্বল সম্পাদক কামরুল হোসেন মনি।
শনিবার (৮ নভেম্বর) বেলা সোয়া ৩টার দিকে নগরীর শিববাড়ি মোড়ের সুলতান ডাইন রেস্টুরেন্টের নিচে এ হামলার ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত দুই সাংবাদিককে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিএফইউজে নেতা শাওন জানান, “একটি সংবাদে বক্তব্য নিতে ফোন করলে বিপ্লব আবির নামে এক ব্যক্তি তাঁকে শিববাড়ি মোড়ে আসতে বলেন। পরে তিনি সহকর্মী মনিকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে গেলে ৭-৮ জন দুর্বৃত্ত হঠাৎ তাঁদের ওপর হামলা চালায়।”
তিনি আরও বলেন, “আমি টাইগার গার্ডেনে আশ্রয় নিতে সক্ষম হই, কিন্তু মনি গুরুতরভাবে আহত হন। পরে সহকর্মীরা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান।”
এ ঘটনার পর খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলেও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পুলিশ পৌঁছাতে প্রায় ৪৫ মিনিট সময় নেয়।
সোনাডাঙ্গা থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, “সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। হামলাকারীদের শনাক্ত করে দ্রুত গ্রেফতার করা হবে।”
এ ঘটনায় সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় উঠেছে। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে), মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন (এমইউজে) খুলনা এবং খুলনা প্রেসক্লাব পৃথক বিবৃতিতে এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে জড়িতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে।
খুলনা প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক এনামুল হক, সদস্য সচিব রফিউল ইসলাম টুটুল ও নির্বাহী সদস্যরা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, “মুক্ত গণমাধ্যম বিরোধী কোনো অপতৎপরতা সহ্য করা হবে না। অতীতেও স্বৈরাচার সাংবাদিকদের সত্য বলা থেকে বিরত রাখতে পারেনি, ভবিষ্যতেও পারবে না।”
বিবৃতিতে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়।
এদিকে, এই ঘটনার প্রতিবাদে এবং সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবিতে রবিবার (৯ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় খুলনা প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে খুলনা প্রেসক্লাব ও মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন খুলনা।
এছাড়া দিঘলিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ শহিদুল ইসলাম ও অন্যান্য সদস্যরাও এক বিবৃতিতে হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, “সাংবাদিকদের ওপর হামলা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর আঘাত। এ ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে ভবিষ্যতে এমন হামলা আরও বেড়ে যেতে পারে।”
বিবৃতিতে প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে পুলিশ প্রশাসনের প্রতি দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।