1. hmonir19799@gmail.com : Hossain Monir : Hossain Monir
  2. rtbdnews@gmail.com : RT BD NEWS : RT BD NEWS
  3. info@www.rtbdnews.com : RT BD NEWS :
বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:১৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বাংলাদেশ ব্যাংক ১৩টি ব্যাংকের কাছ থেকে ১৪ কোটি ১৫ লাখ ডলার কিনেছে মথুরায় দিল্লি–আগ্রা এক্সপ্রেসওয়েতে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১৩ জুলাই গণঅভ্যুত্থান হত্যাকাণ্ডের বিচার যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় এগিয়ে চলছে ঝিনাইদহে নেশার টাকা না দেওয়ায় স্ত্রীর গলা কেটে হত্যার চেষ্টা তোপধ্বনির মাধ্যমে মুন্সীগঞ্জে পালিত হলো মহান বিজয় দিবস ২০২৫ কাহারোলে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস পালিত দিঘলিয়ায় যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস ২০২৫ উদযাপন ভাণ্ডারিয়ায় যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদযাপিত পিরোজপুরে সমৃদ্ধি কর্মসূচির আওতায় দিনব্যাপী বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান কালীগঞ্জে কিন্ডারগার্ডেন এন্ড প্রি-ক্যাডেট বৃত্তি পরীক্ষা ২০২৫ সম্পন্ন

ইতিহাসের ছায়া বর্তমান বাংলাদেশে: নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন, আস্থা হারাচ্ছে সেনাবাহিনী?

তিয়াসা জাহান নীলা
  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৫ জুন, ২০২৫
বাংলাদেশের নিরাপত্তা ও সেনাবাহিনির বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নের মুখে

১৭৫৭ সালের পলাশীর যুদ্ধে শুধু নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতন হয়নি, ভেঙে পড়েছিল একটি জাতির মনোবল ও আত্মবিশ্বাস। তখন জনতার নীরবতা, বিশ্বাসঘাতক মীরজাফরের মতো অভ্যন্তরীণ শত্রু এবং একটি সংগঠিত বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তা বাংলার স্বাধীনতাকে শেষ করে দিয়েছিল। ইতিহাস যেন নিজের পুনরাবৃত্তি করছে—এইবার মঞ্চ বাংলাদেশ।

ভারতের হুমকি ও গোপন কৌশল: বাংলাদেশ কি ঝুঁকিতে?

সম্প্রতি ভারতের একাধিক আগ্রাসী বক্তব্য, সীমান্তে গোলাগুলি, এবং রহস্যজনক ‘পুশ ইন’ কৌশল জনমনে সন্দেহ জাগিয়েছে। ভারতের ভূরাজনৈতিক তৎপরতা ও অভ্যন্তরীণ ‘ট্রেনিংপ্রাপ্ত’ কিছু গেরিলা চর বা গোয়েন্দা দলের বাংলাদেশে গোপনে প্রবেশ—এমন আশঙ্কা বাড়ছে।

কিন্তু প্রশ্ন হলো, এত বড় নিরাপত্তা কাঠামো থাকা সত্ত্বেও কেন বাংলাদেশের বিজিবি বা সেনাবাহিনী দৃশ্যত নিষ্ক্রিয়? আদৌ কি তারা এসব অনুপ্রবেশ ঠেকাতে পারছে না, নাকি কোন অদৃশ্য চাপ বা কূটনৈতিক চুক্তির কারণে তারা নীরব?

বিজিবি ও সেনাবাহিনির ভূমিকা: জনগণের আস্থায় ভাঙন?

সীমান্তে অস্থিরতা, অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা এবং বিদেশি হস্তক্ষেপের গুঞ্জনের মধ্যেও সেনাবাহিনির প্রতিক্রিয়া প্রায় শূন্য। বিজিবি সীমান্তে টহল দিলেও ‘পুশ ইন’ রোধে তাদের কার্যকর কোনো প্রতিরোধ বা প্রতিবাদ চোখে পড়ছে না।

এমন পরিস্থিতিতে জনগণের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে— বিজিবি কি তাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করছে? সেনাবাহিনী কি কেবল কুচকাওয়াজ আর প্রতীকী মহড়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ? কোনো ‘আন্তর্জাতিক চুক্তি’ কি তাদের কার্যকর পদক্ষেপ থেকে বিরত রাখছে?

ইতিহাসের পাতায় বারবার দেখা গেছে, কোনো জাতি বাহ্যিক শত্রুর হাতে যতটা না পরাজিত হয়, তার চেয়েও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় অভ্যন্তরীণ দুর্বলতা, আত্মঘাতী নিষ্ক্রিয়তা এবং বিশ্বাসঘাতকতার কারণে। ১৭৫৭ সালের পলাশীর যুদ্ধ ছিল এর এক নির্মম উদাহরণ। নবাব সিরাজউদ্দৌলার বিপক্ষে মীরজাফর, রায়দুর্লভ, ঘষেটি বেগমদের মতো বিশ্বাসঘাতকরা হাত মিলিয়েছিল বিদেশি শক্তির সঙ্গে। সাধারণ জনগণ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে নবাবের অপমান, নিপীড়ন এবং মৃত্যুর দৃশ্য উপভোগ করেছিল—কেউ প্রতিরোধ করেনি, কেউ প্রতিবাদও করেনি। এমনকি লর্ড ক্লাইভ নিজেও বলেছিলেন, “ওই মুহূর্তে যদি জনগণ একটি করে ঢিল ছুঁড়ত, ইংরেজদের পরাজয় নিশ্চিত ছিল।”

আজকের বাংলাদেশেও দৃশ্যপট অনেকটাই মিল পাচ্ছে। সীমান্তে ভারতের কথিত অনুপ্রবেশ, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাহীনতা, রাজনৈতিক দ্বিধা এবং রাষ্ট্রীয় বাহিনির নিষ্ক্রিয় ভূমিকা জনমনে গভীর আশঙ্কা তৈরি করছে। জাতি যখন বিভক্ত, নেতৃত্ব যখন দ্বিধাগ্রস্ত, আর বাহিনী যখন অদৃশ্য চাপে নিষ্ক্রিয়—তখন শত্রু বাহ্যিক না হয়েও সফল হয়ে ওঠে। ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটতে সময় লাগে না।

বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি প্রমাণ করে, আমাদের নিরাপত্তা শুধু বাহিনী দিয়ে রক্ষা সম্ভব নয়—এটির জন্য দরকার ঐক্যবদ্ধ নেতৃত্ব, জনতার আস্থা, এবং আত্মমর্যাদাবোধসম্পন্ন প্রতিরক্ষা নীতি। ইতিহাস বলছে, যখন জাতি নিজে লড়তে শেখে না, তখন অন্য কেউ এসে লড়াই করে দেয় না—বরং শাসন করে।

সুতরাং, ইতিহাস আমাদের একটাই কঠিন শিক্ষা দেয়: জাতি হিসেবে দুর্বল মানসিকতা, বিশ্বাসঘাতকতা এবং নীরব দর্শক হয়ে থাকা আত্মহননের নামান্তর। অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা না নিলে ভবিষ্যতেও আমরা শুধুই কলঙ্কিত অধ্যায়ের পুনরাবৃত্তি দেখতে পাব।

সমাধান কোথায়?

  • সেনাবাহিনিকে হতে হবে আরও স্বচ্ছ, সাহসী ও জনবান্ধব।

  • বিজিবিকে প্রয়োজন বাস্তব সময়ের গোয়েন্দা তথ্য ও প্রগতিশীল প্রযুক্তি।

  • জনগণের কাছে জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে রাষ্ট্রীয় বাহিনির প্রতিটি কর্মকাণ্ড।

  • সীমান্তে যে কোনো অনুপ্রবেশ বা হুমকির বিরুদ্ধে স্বচ্ছভাবে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

আজকের বাংলাদেশ এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। ইতিহাসের শিক্ষা যদি আমরা না নেই, তবে আমাদের ভবিষ্যতও সিরাজের মতই হবে—নির্বাক, অসহায় ও বিশ্বাসঘাতকদের কাছে আত্মসমর্পণকারী। আমাদের সেনাবাহিনী ও বিজিবির সময় এসেছে আস্থা পুনরুদ্ধার করার—কেবল প্রতিরক্ষার নয়, জনতার পাশে দাঁড়ানোই হবে আজকের আসল যুদ্ধ।

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 𝑹𝑻 𝑩𝑫 𝑵𝑬𝑾𝑺 আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট