ঋতুপর্ণাদের সাফল্যের পর এবার ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২০ নারী ফুটবল দল। দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষার পর তারা অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপে রানার্সআপদের একটি জায়গা করে নিয়েছে, যা তাদের প্রথমবারের মতো মূল পর্বে খেলার সুযোগ এনে দিয়েছে।
বাংলাদেশ দলের এবারের এশিয়ান কাপ বাছাইপর্ব শুরু হয়েছিল স্বাগতিক লাওসকে ৩-১ গোলে পরাজিত করার মধ্য দিয়ে। এরপর তারা পূর্ব তিমুরকে ৮-০ গোলে হারিয়ে নিজেদের ছন্দ ধরে রাখে। বাছাইপর্বে তৃষ্ণা রানী সর্বোচ্চ চার গোল করেন, যার মধ্যে একটি হ্যাটট্রিক রয়েছে। এছাড়া মোসাম্মত সাগরিকা তিন গোল করেছেন।
যদিও আজ দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে ৬-১ গোলে হেরে গেলেও, লেবাননের বিরুদ্ধে চীনের ৮-০ ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করার মাধ্যমে বাংলাদেশ সেরা তিন রানার্সআপ দলের মধ্যে থেকে অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপের মূল পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে। আগামী বছর থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হবে এই মূল টুর্নামেন্ট, যেখানে সেরা আট দল অংশগ্রহণ করবে এবং সেখান থেকে চার দল অনূর্ধ্ব-২০ নারী বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন করবে।
বাংলাদেশের এই সাফল্য দেশের ফুটবল অঙ্গনের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে এবং বিশ্বমঞ্চে খেলার স্বপ্নকে আরও কাছাকাছি নিয়ে এসেছে।
দেশের ফুটবল ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ১৯৮০ সালে কুয়েতে পুরুষদের জাতীয় ফুটবল দল এশিয়ান কাপ খেলেছিল। ২০০৫ সালে অনূর্ধ্ব-১৭ নারী ফুটবল দল প্রথমবার এশিয়ান কাপের যোগ্যতা অর্জন করে, যার পর ২০১৭ ও ২০১৯ সালেও তারা অংশগ্রহণ করে। এর পর ২০২৩ সালে জাতীয় নারী ফুটবল দল প্রথমবারের মতো এশিয়ান কাপে খেলার টিকিট অর্জন করে। এখন অনূর্ধ্ব-২০ দলও এই পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, উত্তর কোরিয়া, ভারত ও চীন সহ আরও কয়েকটি দল ইতোমধ্যে আগামী বছরের থাইল্যান্ড এশিয়ান কাপের মূল পর্বে খেলার জন্য বাছাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২০ নারী দল আগামী এপ্রিল মাসে শুরু হতে যাওয়া এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবে এবং সেখান থেকে বিশ্বকাপের টিকিটের লক্ষ্যে মাঠে নামবে।
২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে পোল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হবে অনূর্ধ্ব-২০ নারী বিশ্বকাপের ১২তম আসর, যেখানে এশিয়ার চার সেরা দল যোগ্যতা অর্জন করবে। বাংলাদেশের এই সাফল্য জাতীয় নারী ফুটবলকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি দেশের ক্রীড়াঙ্গনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।