
ঝিনাইদহে সিআইডির এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ প্রচেষ্টা মামলার বাদীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলে আদালতে মিথ্যা ও বানোয়াট তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত কর্মকর্তা হলেন ঝিনাইদহ সিআইডির এসআই মোঃ ইউসুফ হোসেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর সাবেক সার্জেন্ট ও সদর উপজেলার কালা গ্রামের বাসিন্দা মোঃ ইদ্রিস আলী এ অভিযোগ আনেন।
সংবাদ সম্মেলনে ইদ্রিস আলী জানান, তার ছোট ভাই মোঃ আলী আকবর দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকেন। এই সুযোগে আকবরের স্ত্রী আকলিমা খাতুন লাইলি পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। বিষয়টি টের পেয়ে তিনি লাইলিকে সতর্ক করেন, তবে উল্টো তিনি স্বামীকে তালাক দিয়ে অন্য এক ব্যক্তির সঙ্গে পালিয়ে যান। পরে পরিবারের চাপে ও দুই সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে তাকে পুনরায় সংসারে ফিরিয়ে আনা হয়।
কিন্তু কিছুদিন পর লাইলি আবারও পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। এ নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষ ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে লাইলি তার পরিবারের পরামর্শে ইদ্রিস আলীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ প্রচেষ্টার মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় ঝিনাইদহ সিআইডি।
ইদ্রিস আলীর অভিযোগ, তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ইউসুফ হোসেন মামলার বাদী লাইলির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলেন। তিনি লাইলির বাড়িতে নিয়মিত খাওয়া-দাওয়া করতেন এবং তার ওড়না দিয়ে হাত মুছতেন বলেও দাবি করেন ইদ্রিস। এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে এসআই ইউসুফ ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে ‘দেখে নেওয়ার হুমকি’ দেন।
ইদ্রিস আলী আরও বলেন, সিআইডির ওই কর্মকর্তা প্রায়ই লাইলির সঙ্গে শহরে যেতেন এবং ব্যক্তিগতভাবে সময় কাটাতেন। এতে মামলার তদন্তের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে বলে তার দাবি। তিনি আরও জানান, তিনি পদ্মাকর ইউনিয়ন শ্রমিক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, এবং রাজনৈতিক কারণে স্থানীয় আওয়ামীপন্থী পরিবারগুলো তার বিরোধী।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেন, এসআই ইউসুফ হোসেন ইচ্ছাকৃতভাবে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন, যাতে তিনি হয়রানির শিকার হন। এজন্য তিনি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিভাগীয় তদন্ত ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
এ বিষয়ে সিআইডির এসআই মোঃ ইউসুফ হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “ইদ্রিস আলী তার ভাইয়ের স্ত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছিলেন। নিবিড় তদন্তে এর সত্যতা পাওয়ায় চার্জশিট প্রদান করা হয়েছে। এখন তিনি প্রতিশোধ নিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।”
ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সাধারণ মানুষ নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের দাবি জানিয়েছেন।