ঝিনাইদহে কথিত প্রেমের ফাঁদে ফেলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি সক্রিয় হানিট্র্যাপ চক্র। চক্রটি স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ভুয়া বিয়ের কাবিননামা তৈরি, ফোনকল রেকর্ড ফাঁসের ভয় দেখানো এবং ধর্ষণ ও ধর্ষণচেষ্টার মতো ভুয়া মামলার ভয় দেখিয়ে নিরীহ যুবকদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে আসছে।
চক্রটির নেতৃত্ব দিচ্ছে এক নারী—আসমা খাতুন সাথী। ভুক্তভোগীরা জানান, এই চক্রে স্থানীয় কিছু আইনজীবী সহকারী (মোহরার) ও অসাধু পুলিশ সদস্যও যুক্ত রয়েছেন।
মঙ্গলবার ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন ভুক্তভোগীরা। লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান বেশ কয়েকজন ভিকটিম। উপস্থিত ছিলেন চক্রনেত্রী আসমা খাতুন সাথীর শ্বশুর কামাল হোসেন।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, আসমা খাতুন দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্কের অভিনয় করে ভুয়া কাবিননামা তৈরি করে প্রতারণা করে আসছেন। তিনি থানায় মিথ্যা ধর্ষণ ও অর্থ লেনদেনের অভিযোগ দিয়ে গ্রেফতার ও মামলার ভয় দেখিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছেন মোটা অঙ্কের টাকা।
চক্রের সদস্যরা নিজেদের পুলিশ বা আদালতের মোহরার হিসেবে পরিচয় দিয়ে সহজ-সরল মানুষকে ভয় দেখান। অভিযোগকারীরা জানান, ভুয়া মামলা ও ঠিকানা পরিবর্তনের মাধ্যমে এ চক্র অসংখ্য মানুষকে জিম্মি করে রেখেছে।
ভুক্তভোগী গুলশান আরা ও মর্জিনা খাতুন জানান, আসমা খাতুন বারবার নিজের ঠিকানা বদলে, স্বাক্ষর জালিয়াতি করে নতুন মামলা দাখিল করছেন। এখন পর্যন্ত ঝিনাইদহ ও খুলনার আদালতে তিনি অন্তত ৮টি ভুয়া মামলা দায়ের করেছেন।
চক্রের প্রতারণার কারণে অনেক পুরুষ গৃহহীন হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। অনেকে সামাজিক লজ্জা ও মামলার ভয়ে নিজ বাড়িতে ফিরতে পারছেন না। তিনটি সংসার ইতোমধ্যে এই চক্রের ফাঁদে পড়ে ভেঙে গেছে বলে জানা গেছে।
ভিকটিমরা জানান, মামলা দায়েরের পরপরই চক্রটি কথিত অভিযুক্তদের ভয়ভীতি ও মিথ্যা প্রমাণ উপস্থাপন করে চাপে ফেলে। এতে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে বহু মানুষ মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে মামলা ‘মিটমাট’ করতে বাধ্য হন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চক্রনেত্রী আসমা খাতুন সাথী-এর মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।