ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার জামাল ইউনিয়নে সংঘটিত সহিংসতায় দুইজন নিহত হওয়ার ঘটনার প্রেক্ষিতে বিএনপির করা সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কালীগঞ্জ উপজেলা শাখা।
শনিবার (১৫ জুন) সকাল ১০টায় দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা জামায়াতের আমীর আব্দুল হক মোল্ল্যা। এ সময় দলের অন্য নেতৃবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ১ জুন জামাল ইউনিয়নে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে ইউনুচ আলী ও মহব্বত আলী নামে দুই কর্মী নিহত হন। কিন্তু ১১ জুন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ইলিয়াস রহমান মিঠু সংবাদ সম্মেলনে ইউনুচ আলীকে জামায়াতের কর্মী এবং সন্ত্রাসী বলে উল্লেখ করেন। জামায়াত নেতারা এই বক্তব্যকে “ভিত্তিহীন ও মানহানিকর” আখ্যা দিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানান।
তাদের দাবি, ইউনুচ আলী কখনোই জামায়াতের কর্মী ছিলেন না। কারণ জামায়াতে কর্মী হতে হলে একটি নির্দিষ্ট সিলেবাস ও প্রশিক্ষণ প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। জামায়াত নেতৃবৃন্দ বলেন, “যে কেউ ইচ্ছা করলেই জামায়াতের কর্মী হতে পারেন না।”
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, নিহত ইউনুচ আলীকে কেন্দ্র করে বিএনপি নিজেরাই বিভক্ত। বিএনপির একাংশ তার মৃত্যুর প্রতিবাদে ৪ জুন শহরে মিছিল-সমাবেশ করেছে। এছাড়াও সাবেক এমপি শহিদুজ্জামান বেল্টুর সহধর্মিনী মুর্শিদা জামান প্রকাশ্যে ইউনুচ আলীর পক্ষে কথা বলেছেন এবং ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন।
জামায়াত দাবি করে, এই বিভক্তির ফলেই জেলা বিএনপি সম্প্রতি কালীগঞ্জ উপজেলা কমিটি বিলুপ্ত করে এবং দুই নেতাকে বহিষ্কার করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে জামায়াত নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন, বিএনপির একাংশ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাদের সংগঠনকে সন্ত্রাসী হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছে। এ বিষয়ে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, “ইলিয়াস রহমান মিঠু তার বক্তব্যে ইউনুচ আলীকে জামায়াতের কর্মী ও সন্ত্রাসী বলে দাবি করেছেন, যা সম্পূর্ণ অসত্য এবং বিভ্রান্তিকর।”
সংবাদ সম্মেলনে জামায়াত নেতৃবৃন্দ বলেন, “জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী শক্তির মধ্যে ফাটল ধরাতে একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে। নিজেদের মধ্যে ঐক্য ধরে রাখতে হবে দেশের স্বার্থে।” তারা দাবি করেন, জুলাই বিপ্লবের পর কিছুটা ফ্যাসিবাদমুক্ত হলেও ষড়যন্ত্র এখনো থেমে নেই।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, মাওলানা আবু তালিব – জামায়াতের মনোনীত এমপি প্রার্থী, ঝিনাইদহ-৪, মাওলানা ওলিয়ার রহমান – জেলা প্রশিক্ষক সম্পাদক, মাওলানা লুৎফর রহমান – উপজেলা সেক্রেটারি জেনারেল, মতিউর রহমান – সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল, আব্দুল হামিদ – কর্মপরিষদ সদস্য।