
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) নির্মাণাধীন একটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ সড়কের কাজ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় সাতটি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, নতুন রাস্তা নির্মাণের জন্য প্রায় দেড় বছর আগে পুরাতন রাস্তা খুঁড়ে ফেলা হলেও এরপর থেকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ এগিয়ে নেয়নি। ফলে বর্ষাকালে সড়কজুড়ে তৈরি হওয়া গর্ত, বালু ধ্বস ও কাদা জমে যানবাহন চলাচল প্রায় সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সিংগী বাজার থেকে মঙ্গলপৌতা বাজার পর্যন্ত সড়কের পুরোনো অংশ খুঁড়ে রাখা হলেও নতুন নির্মাণকাজের কোনো অগ্রগতি নেই। সড়কটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় স্থানীয়দের ইউনিয়ন পরিষদ, ভূমি অফিস, ব্যাংক এবং সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতে কয়েক কিলোমিটার ঘুরে যেতে হচ্ছে। জরুরি সেবা—অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিসসহ প্রয়োজনীয় যানবাহনও এসব গ্রামে প্রবেশ করতে পারছে না।
ঝিনাইদহ জেলা অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৩ কোটি ৭৯ লাখ টাকার ব্যয়ে ২৯৯০ মিটার সড়ক নির্মাণের কাজ পান মেসার্স মিজানুর রহমান নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রকল্প অনুযায়ী ২০২৪ সালের আগস্টে কাজ শুরু হয়ে ২০২৫ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও চলতি বছরের প্রথম দিকে অল্প কিছু কাজ করার পর আর কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি।
মেগুরখিদ্দা গ্রামের বাসিন্দা আরিফ হাসান বলেন, “এক বছর আগে রাস্তা খুঁড়ে ফেলে রেখে দেওয়া হয়েছে। বড় কোনো গাড়ি তো গ্রামে ঢুকতেই পারে না। অথচ কাজের কোনো খোঁজখবর নেই। আমরা দ্রুত সমাধান চাই।”
অন্যদিকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মো. রানা দাবি করেন, “নতুন ইট উঠলে কাজ শুরু করব। তাছাড়া অসুস্থতার কারণে কাজ চালিয়ে যেতে পারিনি।”
কালীগঞ্জ উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী সৈয়দ শাহরিয়ার আকাশ বলেন, “ঠিকাদারকে বারবার চিঠি পাঠানো হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। এখন আমরা নিজেও অসহায় অবস্থায় আছি।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেজওয়ানা নাহিদ বলেন, “ঘটনাটি আপনার মাধ্যমে প্রথম জানলাম। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি দ্রুত নির্মাণের দাবি জানাচ্ছেন স্থানীয়রা, যাতে স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, কৃষিপণ্য পরিবহন ও জরুরি যোগাযোগ স্বাভাবিকভাবে নিশ্চিত করা যায়।