২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের তিন ফরম্যাটেই অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পান বাঁহাতি ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে এই বিরল দায়িত্ব বেশিদিন ধরে রাখতে পারেননি তিনি। টি২০ বিশ্বকাপের পরপরই তিনি সরে দাঁড়ান সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের নেতৃত্ব থেকে। আর সর্বশেষ ১৩ জুন রাতে বিসিবি ওয়ানডে দলের নতুন অধিনায়ক হিসেবে ঘোষণা করেছে মেহেদী হাসান মিরাজকে। এখন কেবল টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে বহাল থাকলেন শান্ত।
বিসিবির পক্ষ থেকে এক বছরের জন্য মিরাজকে ওয়ানডে অধিনায়ক ঘোষণার আগে শান্ত এই দায়িত্বে থাকতে চেয়েছিলেন বলে একটি অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে। অথচ কোনও পূর্ব ঘোষণা বা আনুষ্ঠানিক বোর্ড সভা ছাড়াই এই সিদ্ধান্ত আসে।
এক সিনিয়র ক্রিকেটার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “তাড়াহুড়ো করে অধিনায়ক পরিবর্তনের প্রয়োজন হলো কেন, বুঝতে পারলাম না। এভাবে দ্রুত সিদ্ধান্ত না নিয়ে ভালোভাবে কাজটা শেষ করা যেত। এমন সিদ্ধান্ত দলের ওপর বড় প্রভাব ফেলে দেয়।”
টি২০ অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে শান্ত বলেন, “আমি নিজে থেকেই ক্রিকেট বোর্ডকে জানিয়েছিলাম টি২০তে আর ক্যাপ্টেন্সি করতে চাই না। কারণ নিজের ব্যাটিংয়ে সময় দিতে চাচ্ছিলাম… নিজেকে সময় দেওয়া কঠিন হচ্ছিল, বিশেষ করে নিজের ব্যাটিং।” তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যতে ব্যাটিংয়ে আরও ভালোভাবে অবদান রাখতে চান এবং এজন্যই দায়িত্ব ছেড়েছেন।
শান্তর অবর্তমানে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে টি২০তে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেন লিটন দাস। তার অধিনায়কত্বেই হোয়াইটওয়াশ করে টাইগাররা। এরপরই পাকিস্তান সিরিজের আগে লিটনকে স্থায়ীভাবে টি২০ অধিনায়ক করা হয়। ২০২৫ সালের টি২০ বিশ্বকাপে তিনিই নেতৃত্বে থাকবেন।
শান্তও সমর্থন জানিয়েছেন লম্বা সময়ের জন্য অধিনায়কত্ব দেওয়ার বিষয়ে, “যে-ই থাকুক, লম্বা সময় যদি দেওয়া হয়… তাহলে প্ল্যান করা খুবই সহজ।”
বর্তমানে কেবল টেস্ট ফরম্যাটে অধিনায়ক হিসেবে বহাল আছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। আগামী ১৭ জুন গলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ দিয়ে শুরু হবে টাইগারদের বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন সাইকেল।
শান্ত বলেন, “আমার সাথে বোর্ডের যতটুকু কথা হয়েছে, তাদেরও চিন্তাভাবনা এরকমই। লম্বা সময় পেলে ক্যাপ্টেন ভাবতে পারে কোন কন্ডিশনে কোন খেলোয়াড় খেলাবে… ইতোমধ্যে টেস্টে একটা সুন্দর শুরু হয়েছে। আশা করি শ্রীলংকার বিপক্ষেও সেই ধারা অব্যাহত রাখার চেষ্টার করবো।”
নাজমুল হোসেন শান্তর জন্য এটি একধরনের চ্যালেঞ্জিং সময় হলেও টেস্ট দলের নেতৃত্বে তার ধারাবাহিকতা এবং ভবিষ্যতের পরিকল্পনা ইতিবাচক বার্তা দেয়। এদিকে ওয়ানডেতে মিরাজ ও টি২০তে লিটন—দুই নতুন নেতা সামনে নিয়ে যাচ্ছেন টাইগারদের। এখন সময়ই বলে দেবে এই রদবদল কতটা সফল হয়।