পুরো রমজান মাসে পর্যটকশূন্য ছিল কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত। ছাড় দিয়েও হোটেল-মোটেল, গেস্টহাউস ও রিসোর্টগুলো পর্যটক পায়নি। বন্ধ ছিল পর্যটকনির্ভর রেস্তোরাঁসহ অন্যান্য ব্যবসা। তবে ঈদুল ফিতরের ছুটিতে সেই নীরবতা ভেঙে পর্যটকের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে কক্সবাজার।
ঈদের দিন দুপুর থেকেই স্থানীয় পর্যটকরা সৈকতমুখী হয়েছেন। বাইরের জেলা থেকে পর্যটকরা আসতে শুরু করবেন মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) থেকে। দীর্ঘ ৯ দিনের ছুটি থাকায় চাকরিজীবীরা সপরিবারে বেড়ানোর সুযোগ পাচ্ছেন। ফলে কক্সবাজারের হোটেল-মোটেল ও রেস্তোরাঁগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও সংস্কার করে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
হোটেল-মোটেল মালিকদের মতে, রমজানের আগে চার মাসে প্রতি সপ্তাহে গড়ে আড়াই থেকে তিন লাখ পর্যটক কক্সবাজার ভ্রমণ করেছেন। গত বছর ঈদুল ফিতরে প্রায় ১০ লাখ পর্যটকের সমাগম হয়েছিল। এবারও ব্যাপক পর্যটক সমাগমের আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।
হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার জানান, ২ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত ৮০ শতাংশ কক্ষ বুকিং হয়ে গেছে। শহর ও মেরিন ড্রাইভ এলাকায় পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেল, গেস্টহাউস ও রিসোর্টে প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার পর্যটকের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে।
পর্যটকদের নিরাপত্তা ও সেবার মান নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর রয়েছে। টুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ জানিয়েছেন, পর্যটকদের বাড়তি চাপ সামলাতে সমুদ্রসৈকত ও পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে সার্বক্ষণিক টহল জোরদার করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন জানিয়েছেন, পর্যটকদের সেবা নিশ্চিত করতে প্রশাসন কাজ করছে। হোটেল-মোটেল ও রেস্তোরাঁয় অতিরিক্ত টাকা আদায় বন্ধে এবং হয়রানি রোধে ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে থাকবে। কোনো অভিযোগ পেলেই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হোটেল-মোটেল কর্তৃপক্ষ পর্যটকদের অনলাইনে আগেভাগে বুকিং দিয়ে আসার পরামর্শ দিয়েছেন, যাতে যাত্রা নির্বিঘ্ন হয় এবং ভ্রমণ আরও উপভোগ্য হয়।
কক্সবাজারের সমুদ্রসৈকত, পাহাড়, নদী, ঝরনা, ছড়া ও অন্যান্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে ইতোমধ্যে হাজারো পর্যটক ভিড় জমাতে শুরু করেছেন, যা ঈদের ছুটিতে আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।