গাজার উত্তরাঞ্চলে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহৃত একটি স্কুলে ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর হামলায় অন্তত ২৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেক ফিলিস্তিনি। শুক্রবার (৪ এপ্রিল) হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে এই তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
স্থানীয় হাসপাতাল সূত্র জানায়, গাজার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের তুফাহ জেলার দার আল-আরকাম স্কুলে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া এক পৃথক ঘটনায় আরও বহু মানুষ আহত হয়েছেন।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, তারা হামলা চালিয়েছে হামাসের কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারে অবস্থানরত সন্ত্রাসীদের ওপর। তবে কোনো স্কুলের নাম বা নির্দিষ্ট স্থানের উল্লেখ করেনি।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলের টানা অভিযানে নিহত হয়েছেন আরও ৯৭ জন ফিলিস্তিনি। হামলার মাত্রা ও বিস্তার দিন দিন বাড়ছে। ইসরায়েল জানায়, তারা গাজার ভেতরে স্থল অভিযানও বিস্তৃত করেছে, যার লক্ষ্য হামাস নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল দখল করা।
গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেন, দার আল-আরকাম স্কুলে নিহতদের মধ্যে নারী, শিশু ও অন্তঃসত্ত্বা নারীও রয়েছেন। তিনি জানান, এক অন্তঃসত্ত্বা নারী (যার গর্ভে যমজ সন্তান ছিল), তার স্বামী, বোন ও তিন সন্তান নিখোঁজ রয়েছেন।
আল-আহলি হাসপাতালের এক ভিডিওতে দেখা গেছে, আহত শিশুদের গাড়ি ও ট্রাকে করে চিকিৎসার জন্য আনা হচ্ছে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (IDF) জানায়, তারা যেখানে হামলা করেছে, সেটি হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলের বেসামরিক জনগণ ও সেনাদের ওপর হামলার পরিকল্পনার কাজে ব্যবহার করছিল। তারা দাবি করেছে, বেসামরিক প্রাণহানি কমাতে তারা অনেক সাবধানতা অবলম্বন করছে।
এছাড়া, গাজার শেজাইয়া এলাকায় রাতভর বেশ কয়েকটি বাড়িতে বিমান হামলা চালানো হয়। এতে আরও অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন। গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগের প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, ধ্বংসস্তূপ থেকে শিশুদের মরদেহ বের করছে উদ্ধারকর্মীরা।
এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, “ঘুমন্ত অবস্থায় হঠাৎ এক বিকট বিস্ফোরণে ঘুম ভেঙে যায়।”
IDF থেকে শেজাইয়া এবং আশেপাশের চারটি এলাকার বাসিন্দাদের পশ্চিম গাজা শহরে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারা সতর্ক করে বলেছে, “সন্ত্রাসী অবকাঠামো ধ্বংসে” জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এই ধরনের নির্দেশনার ফলে চলতি সপ্তাহে এক লাখের বেশি ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছে।