ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর একাধিকবার গ্রিনল্যান্ড দ্বীপের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। সম্প্রতি তিনি আবারও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র গ্রিনল্যান্ডের নিয়ন্ত্রণ নেবে বলে তিনি মনে করেন। অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এমন মন্তব্য করেছেন ট্রাম্প। তবে ডেনমার্কের স্বায়ত্তশাসিত এ অঞ্চলের কর্তৃপক্ষ পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে, গ্রিনল্যান্ড বিক্রি হবে না।
উত্তর আমেরিকার উত্তর-পূর্ব সুমেরু অঞ্চলে অবস্থিত বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপ গ্রিনল্যান্ড খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ। বিরল মৃত্তিকা ধাতুর অষ্টম বৃহত্তম মজুত রয়েছে। মুঠোফোন, ব্যাটারি, বৈদ্যুতিক মোটর তৈরিতে ব্যবহৃত বিরল ধাতু ছাড়াও লিথিয়াম, কোবাল্ট, তেল, গ্যাসের বিশাল মজুত আছে। দ্বীপটির সোনা, তামা, নিকেলসহ অন্যান্য মূল্যবান খনিজ সম্পদগুলো এখনো অনেকাংশে অব্যবহৃত।
আমারক মিনারেলস নামে একটি কোম্পানি গ্রিনল্যান্ডে খনিজ অনুসন্ধান করছে। ১০ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকায় অনুসন্ধানের অনুমতি পেয়েছে তারা। সোনা, তামা, নিকেলসহ বিভিন্ন খনিজ অনুসন্ধানে জোর দেওয়া হচ্ছে। কোম্পানিটি নতুন প্রক্রিয়াকরণকেন্দ্র স্থাপন করেছে এবং সোনা উত্তোলন বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে।
পশ্চিমা দেশগুলো চীনের বিকল্প হিসেবে গ্রিনল্যান্ডের বিরল মৃত্তিকা ধাতুর দিকে নজর দিচ্ছে। জলবায়ু সংকট সমাধানে এ দ্বীপের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। গ্রিনল্যান্ডের সরকার মনে করে, খনিজ সম্পদের ব্যবস্থাপনা স্বাধীনতার পথ প্রশস্ত করবে।
গ্রিনল্যান্ডের অর্থনীতি এখনো সরকারি খাত ও মৎস্যসম্পদনির্ভর। বার্ষিক জিডিপি মাত্র ৩০০ কোটি ডলার। ডেনমার্ক সরকারের ৬০ কোটি ডলার ভর্তুকির ওপর নির্ভরশীল। রাজনীতিবিদদের আশা, খনিজ শিল্পের মাধ্যমে ডেনমার্কের ওপর নির্ভরতা কমানো সম্ভব হবে।
গ্রিনল্যান্ডের ৮০ শতাংশ বরফে ঢাকা। পরিবেশসংক্রান্ত কঠোর বিধিনিষেধ এবং দুর্গম অবস্থান কার্যক্রম পরিচালনায় বড় চ্যালেঞ্জ। স্থানীয় মানুষ খনিজ শিল্প সমর্থন করলেও অর্থ দেশে থাকবে কি না, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন।
গ্রিনল্যান্ডের খনিজ সম্পদ নিয়ে বৈশ্বিক আগ্রহ বাড়ছে। তবে পরিবেশগত ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এই দ্বীপটি কতটা লাভবান হতে পারবে, তা সময়ই বলে দেবে। গ্রিনল্যান্ডের খনিজ সম্পদ ব্যবহার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অংশগ্রহণ এবং স্থানীয় সরকারের সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতের দিক নির্দেশ করবে।