বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো ভারতেও উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপিত হয়েছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। রাজস্থানের জয়পুরে এবারের ঈদে সম্প্রীতির এক অনন্য চিত্র দেখা গেছে। দিল্লি রোডে অবস্থিত ঈদগাহে হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েকজন ব্যক্তি মুসলিমদের ওপর ফুল বর্ষণ করে তাদের আনন্দে সামিল হন।
হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘হিন্দু-মুসলিম ঐক্য কমিটি’র ব্যানারে আসা কিছু হিন্দু পুরুষ ঈদ উদযাপনে অংশ নিয়ে মুসলিমদের ওপর ফুল ছিটিয়ে সৌহার্দ্যের বার্তা দিয়েছেন।
একটি ভিডিওতে দেখা যায়, গেরুয়া পোশাক পরিহিত হিন্দু পুরুষরা ঈদগাহের উঁচু স্থানে দাঁড়িয়ে মুসলিমদের দিকে ফুল ছুঁড়ে দিচ্ছেন। সাম্প্রতিক সময়ে ভারতে প্রকাশ্যে নামাজ আদায় নিয়ে বিতর্ক যখন তুঙ্গে, তখন জয়পুরের এই সম্প্রীতির দৃশ্য প্রশংসিত হচ্ছে। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যেও ঈদ উৎসব জাঁকজমকের সঙ্গে উদযাপিত হয়েছে।
ঐতিহাসিক জামে মসজিদে হাজারো মুসলিম ঈদের নামাজ আদায় করেন। এক মুসলিম উপাসক সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলেন, “ঈদ আমাদের বড় উৎসবগুলোর একটি। আমরা দেশ ও জাতির শান্তি কামনা করে প্রার্থনা করেছি। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেছি।”
একজন বিদেশি শিক্ষার্থী বলেন, “দিল্লির জামে মসজিদ অত্যন্ত সুন্দর একটি স্থান। এখানে এসে অনেক বন্ধু ও মানুষের সঙ্গে পরিচিত হয়েছি। একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পেরে দারুণ অনুভূতি হয়েছে।”
অযোধ্যায় ঈদের নামাজ নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। পুলিশের টহল জোরদার করা হয়, যাতে শান্তিপূর্ণভাবে উৎসব পালন করা যায়। পুলিশের আইজি প্রবীণ কুমার জানান, “আমরা নিয়মিত টহল দিচ্ছি এবং সকলের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে সতর্ক অবস্থায় রয়েছি।”
আগ্রায় তাজমহল প্রাঙ্গণে ঈদের নামাজ আদায় করা হয়। নামাজ শেষে ঐতিহাসিক এই সৌধের সামনে মুসলিমদের একে অপরকে আলিঙ্গন করে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে দেখা গেছে।
তিরুনেলভেলি ও ভেলোরে বিশাল জমায়েতের মধ্য দিয়ে ঈদ উদযাপন করা হয়। প্রার্থনায় ৫০ হাজারের বেশি মানুষ অংশ নেন।
ঈদ উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক্স (সাবেক টুইটার)-এ লিখেছেন, “ঈদ-উল-ফিতরের শুভেচ্ছা। এই উৎসব আমাদের সমাজে আশা, সম্প্রীতি এবং দয়ার চেতনা বৃদ্ধি করুক। আপনাদের সকল প্রচেষ্টায় আনন্দ এবং সাফল্য আসুক। ঈদ মোবারক!”
ভারতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নানা চিত্র দেখা গেলেও, জয়পুরের হিন্দু-মুসলিম ভ্রাতৃত্বের এই অভিনব উদাহরণ দেশজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। এতে ধর্মীয় সম্প্রীতি আরও দৃঢ় হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।