বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের বাজারকে আরও স্থিতিশীল ও স্বচ্ছ করতে ডলারের দাম নির্ধারণে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, এখন থেকে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের অনুমোদিত ব্যাংক শাখাগুলো (এডি ব্রাঞ্চ) তাদের গ্রাহক ও ডিলারদের সঙ্গে আলোচনা করে নিজেরা ডলারের দাম নির্ধারণ করতে পারবে।
আজ মঙ্গলবার (১ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ থেকে এই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
প্রতিদিন দুইবার বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠাতে হবে। এক লাখ ডলারের বেশি লেনদেনের তথ্য বেলা সাড়ে ১১টার মধ্যে এবং বাকি লেনদেনের তথ্য বিকেল সাড়ে পাঁচটার মধ্যে জানাতে হবে।
১২ জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিদিন ডলারের ভিত্তিমূল্য বা রেফারেন্স প্রাইস প্রকাশ করবে।এই তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে। বাজারে ডলারের দাম অস্থিতিশীল করতে কেউ যেন সুযোগ নিতে না পারে, সেজন্য নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) চলতি বছরের মধ্যে ডলারের দাম পুরোপুরি বাজারভিত্তিক করার পরামর্শ দিয়েছে। এর অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি শীর্ষ ২৫টি ব্যাংকের সঙ্গে সভা করে। সেখানে নতুন এই পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।
সভায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, ঘোষিত দামের বাইরে ডলার কেনাবেচা করলে শাস্তির মুখে পড়তে হবে। একই সঙ্গে প্রবাসী আয় এবং রপ্তানি আয়ের ডলার একই দামে কেনার বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, আমদানি দায় মেটাতে ডলারের সংকট দেখা দিলে রিজার্ভ থেকে নিলামের মাধ্যমে ডলার বিক্রি করা হবে।
গত আড়াই বছর ধরে ডলারের বাজার অস্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। ডলারের দাম ৮৫ টাকা থেকে বেড়ে বর্তমানে ১২০ টাকায় পৌঁছেছে। নতুন প্রজ্ঞাপন কার্যকর হলে এই বাজার আরও স্থিতিশীল হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
২০২৫ সালের মধ্যে ডলারের দাম পুরোপুরি বাজারভিত্তিক করার পরিকল্পনা রয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় আজকের এই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি বন্ধ রাখার ফলে বাজারে প্রবাসী আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। নতুন এই উদ্যোগ ডলারের বাজারকে আরও স্থিতিশীল করার পাশাপাশি রিজার্ভ ব্যবস্থাপনাকে সহজতর করবে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।
এই পদক্ষেপের ফলে ডলারের বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরবে এবং প্রবাসী আয় ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধির সম্ভাবনা তৈরি হবে।