বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, তার ওপর এবং তার পরিবারের ওপর যেসব অত্যাচার-নিপীড়ন চালানো হয়েছে, তার প্রতিশোধ তিনি নিতে চান রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে। তিনি বলেন, “আমার উপর যে অত্যাচার-নির্যাতন হয়েছে, আমার মায়ের উপর অত্যাচার হয়েছে, আমার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে—আমি এসবের প্রতিশোধ নিতে চাই ৩১ দফা বাস্তবায়ন করে।”
বুধবার (২৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রংপুর বিভাগের রংপুর, নীলফামারী ও সৈয়দপুর সাংগঠনিক জেলায় আয়োজিত কর্মশালায় অনলাইনে যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় তিনি বলেন, বিএনপির উপর দেশের মানুষ আস্থা রাখে। সেই আস্থা ধরে রাখার জন্য প্রতিটি নেতা-কর্মীকে এই ৩১ দফা জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে এবং তাদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করতে হবে।
তারেক রহমান বলেন, “৩১ দফা কেবল একটি রাজনৈতিক ইশতেহার নয়, এটি হলো দেশের ভবিষ্যৎ গঠনের রূপরেখা। জনগণের দাবির প্রতিফলন ঘটেছে এই দফাগুলোর মধ্যে।” তিনি উল্লেখ করেন, টিভির টকশো থেকে শুরু করে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মুখেও আজকাল সংস্কারের কথা শোনা যায়, যেগুলো বিএনপির ৩১ দফার সাথেই মিলে যায়। তবে এ কর্মশালায় প্রান্তিক মানুষের চাওয়ার প্রতিফলন আরও স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে, যা বাস্তবায়নে গুরুত্ব দিতে হবে।
তিনি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রাষ্ট্র পরিচালনার সময়কাল তুলে ধরে বলেন, “তারা শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি উৎপাদন ও অবকাঠামো উন্নয়নে কাজ করেছেন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা দিয়েছেন, নারীর ক্ষমতায়ন করেছেন এবং বিচার ব্যবস্থার স্বাধীনতা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নিয়েছেন।” তারেক রহমান জোর দিয়ে বলেন, “আমরা তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করেই দেশের কল্যাণে কাজ করে যাবো।”
রংপুর শিল্পকলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামু। উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন দলের প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু। প্রশিক্ষণ প্রদান করেন বিএনপি মিডিয়া সেলের প্রধান অধ্যাপক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবীব দুলু, গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহান। এছাড়া আরও বক্তব্য রাখেন ইসমাইল জবিউল্লাহ, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, আব্দুল খালেক, নেওয়াজ হালিমা, শাম্মী আক্তার ও জহুরুল আলম প্রমুখ।
একই দিনে নীলফামারী শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপি সভাপতি আলমগীর সরকার। বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। অন্যদিকে সৈয়দপুর পৌর কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত কর্মশালার উদ্বোধন করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী বেবি নাজনীন। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন ড. মাহাদি আমিন, এবিএম মোশারফ, আনিছুর রহমান, রেহানা আক্তার রানু, আকরামুল হাসান, বিলকিস ইসলামসহ রংপুর বিএনপির প্রায় ৩ শতাধিক নেতা।