আমেরিকা ও পশ্চিমাদে ভয়ংকর যুদ্ধের খেলা থেকে কোন ভাবেই রেহাই মিলছে না বিশ্ববাসীর। অনেকের ধারণা যে, শুরু হয়ে গেছে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ। সামনের দিকে ইউক্রেনকে সাইনবোর্ড হিসেবে ব্যবহার করে এর মূলে যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমারা তা বুঝে গেছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তবে তাদের ছাড় দিচ্ছেন না রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
আঞ্চলিক রাজনীতি থেকে শুরু করে বিশ্ব রাজনীতির মোড় অনেকটা একাই ঘুরিয়ে দিচ্ছেন রাশিয়ার লৌহ মানব ভ্লাদিমির পুতিন। এই অবস্থায় নতুন মাত্র যুক্ত করেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়। বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অনেকটা রহস্য জনকভাবে ইউক্রেনকে রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলা আরো জোরদার করতে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছেন। যার প্রতিক্রিয়ায় উপযুক্ত ও পরিস্কার জবাব দেওয়ার হুমকি দিয়েছে রাশিয়ার প্রশাসন।
এমনকি বাইডেন সংঘাতকে আরো উসকে দিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে ক্রেমলিনের। উত্তেজনার মধ্যে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন ভ্যালারি জালুঝনি নামে ইউক্রেনের সাবেক শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা। সে দাবি করেছেন যে, এই বছরেই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে বলে তিনি জানান। কারণ হিসেবে দেখিয়েছেন যে, রাশিয়ার মিত্র দেশগুলোর ইউক্রেনের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে যাওয়া মানে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে।
এই মূহুর্তে যুক্তরাজ্যে ইউক্রেনের দূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করা এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধে উত্তর কোরিয়ার সেনা এবং চীনা সমরাস্ত্র যুক্ত হয়েছে যা নিশ্চিত করা হয়েছে। ইউক্রেনের সামনের ফ্রন্টলাইনে রয়েছে উত্তর কোরিয়ার সেন্যৈরা। সাথে ইরানি ড্রোন দিয়েও মানুষ হত্যা করছে রাশিয়া। ইউক্রেনের মিত্র যুক্তরাষ্ট্র সহ পশ্চিমারা যেন সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার এবং সংঘাতকে দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বাইরে ছড়িয়ে পড়ার প্রতিরোধ করার আহ্বান জানিয়ে ভ্যালারি জালুঝনি। তিনি বলেন, ইউক্রেনের ভূখণ্ডে এটি এখনও বন্ধ করা সম্ভব। কিন্তু কিছু কারণে মিত্ররা এটি বুঝতে চাচ্ছেন না।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ইউক্রেনের মধ্যে স্থলমাইন পাঠানোর সিদ্ধান্ত এবং ব্রিটেনের তৈরি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র শ্যাডো দিয়ে রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলা চালানোর পর পাল্টা জবাব দিয়েছে ভ্লাদিমির পুতিন। এই হামলার জবাবে রাশিয়ান বাহিনী আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে ইতোমধ্যে। এর পর পরই ভ্লাদিমির পুতিন পশ্চিমাদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন যে, যদি আগ্রাসী কার্যক্রম আরো বৃদ্ধি পায়, তবে মস্কোও সমান প্রতিক্রিয়া দেখাবে। যেসব দেশ তাদের অস্ত্র রাশিয়ার সামরিক স্থাপনায় ব্যবহারের অনুমতি দিচ্ছে, তাদের সামরিক স্থাপনাগুলোতে আঘাত হানার মতো অস্ত্র রুশ ভান্ডারে মজুত আছে এবং যা তাক করা।
বিশ্লেষকরা ধারনা করছেন যে, রাশিয়ায় পশ্চিমা অস্ত্রের ব্যবহার এবং মস্কোর পাল্টা হামলা বিশ্বকে নতুন করে সংঘাতময় পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে যা ভয়াবহ এই অবস্থায় তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধের হুমকি একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। কারণ হিসাবে রাশিয়া ইতোমধ্যে পারমাণবিক বোমা হামলা থেকে রক্ষায় ভ্রাম্যমাণ আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ শুরু করে দিয়েছে।