বিশ্বব্যাপী কার্বন নিঃসরণ, দারিদ্র্য এবং বেকারত্ব শূন্যে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নিয়ে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্যোগে চালু হওয়া ‘থ্রি জিরো’ আন্দোলন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সাড়া ফেলছে। সুইজারল্যান্ডের দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলনের ফাঁকে গত বৃহস্পতিবার ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন সাবেক মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং প্রখ্যাত জলবায়ু কর্মী আল গোর। এ সময় আল গোর ‘থ্রি জিরো’ আন্দোলনের উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
আল গোর শুধু ‘থ্রি জিরো’ আন্দোলনের প্রশংসা করেই থেমে থাকেননি, বরং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গৃহীত সংস্কার কর্মসূচিকে সমর্থন করার অঙ্গীকারও ব্যক্ত করেন। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং আল গোরের এ বৈঠকে জলবায়ু পরিবর্তন, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ক্ষতিকর প্রভাব হ্রাস, এবং বাংলাদেশের নির্বাচন ও ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে গভীর আলোচনা হয়।
অধ্যাপক ইউনূস বৈঠক শেষে আল গোরকে ‘জুলাই অভ্যুত্থান’-এর সময় আঁকা গ্রাফিতি ও দেয়াল চিত্রের ওপর ভিত্তি করে রচিত শিল্পকর্ম সংকলন ‘দ্য আর্ট অফ ট্রায়াম্ফ’ উপহার দেন। বইটি হাতে পেয়ে আল গোর বলেন, “বাংলাদেশের তরুণদের বিপ্লবী চেতনা অসাধারণ। আমি বইটির প্রতিটি পৃষ্ঠা মনোযোগ দিয়ে দেখেছি।”
অধ্যাপক ইউনূসের ‘থ্রি জিরো’ আন্দোলন বিশ্বের সামনে একটি আদর্শ হিসেবে উঠে আসছে। এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হচ্ছে কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনা, দারিদ্র্য দূর করা, এবং বেকারত্বকে নির্মূল করা। আন্তর্জাতিক অঙ্গনের বিভিন্ন নেতা ও জলবায়ু কর্মীরা এ আন্দোলনকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করছেন, যা বাংলাদেশের জন্য গৌরবের বিষয়।
উভয় নেতা জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলা ও বৈশ্বিক উষ্ণায়ন কমাতে বিশ্বব্যাপী সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান। আল গোর মনে করেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাংলাদেশ ইতিমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এবং ‘থ্রি জিরো’ আন্দোলন এ ক্ষেত্রে আরো বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
বিশ্বব্যাপী জলবায়ু সংকট এবং সামাজিক সমস্যার সমাধানে ‘থ্রি জিরো’ আন্দোলন নতুন আশার আলো ছড়াচ্ছে। অধ্যাপক ইউনূসের এই উদ্ভাবনী উদ্যোগ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রশংসিত হওয়ায় বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হচ্ছে।