পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ (পিটিআই) দলের চেয়ারম্যান ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে রাজধানী ইসলামাবাদে শুরু হওয়া বিক্ষোভ ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। তবে, সামরিক বাহিনীর কঠোর অবস্থানের মুখে পিটিআই তাদের বিক্ষোভ কর্মসূচি সাময়িকভাবে স্থগিত ঘোষণা করেছে। পাকিস্তানের প্রধান সংবাদমাধ্যম ডন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
ইমরান খানের মুক্তি, বর্তমান সরকারের পদত্যাগ এবং সংবিধানের ২৬তম সংশোধনী বাতিলের দাবিতে গত ২৪ নভেম্বর থেকে ইসলামাবাদ অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করেন পিটিআই’র বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। আন্দোলনকারীরা মঙ্গলবার ইসলামাবাদের ডি-চকে পৌঁছে বিক্ষোভ শুরু করেন। তবে পরিস্থিতি অস্থির হয়ে ওঠে যখন পুলিশ এবং পাকিস্তানের সীমান্তরক্ষী বাহিনী রেঞ্জার্সের সঙ্গে পিটিআই কর্মীদের সংঘর্ষ ঘটে। এতে উভয়পক্ষের মোট ছয়জন নিহত হন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার আগেই রাজধানীতে সেনা মোতায়েন করেছিল। পিটিআই’র কর্মী-সমর্থকদের দেখামাত্র গুলি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। যদিও সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সরাসরি গুলি চালানোর খবর পাওয়া যায়নি। তবে, ইসলামাবাদের রেড জোন এবং ডি চকে পিটিআই কর্মীদের ওপর ব্যাপক ধরপাকড় চালানো হয়।
ধরপাকড়ের সময় পিটিআই’র শীর্ষ নেতা খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন গান্দাপোর এবং ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবি ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) পিটিআই’র মিডিয়া সেল থেকে দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “নিষ্ঠুর ও নির্মম মনোভাব এবং নিরস্ত্র জনগণকে হত্যার মাধ্যমে রাজধানীকে কসাইখানা বানানোর যে পরিকল্পনা নিয়ে সরকার এগোচ্ছে, তার জেরেই আমরা সাময়িকভাবে আমাদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করছি।”
ডি-চকে পুলিশ, রেঞ্জার্স এবং সেনা সদস্যদের সঙ্গে পিটিআই’র নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনা ঘটে। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা রানা সানাউল্লাহ জানিয়েছেন, বিক্ষোভ থেকে অন্তত ৫০০ জন পিটিআই নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে।
ইসলামাবাদে বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে সরকার যে কঠোর অবস্থান নিয়েছে, তা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে। তবে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সরকার এখনও তাদের সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে।
ইমরান খানের মুক্তি নিয়ে পিটিআই’র আন্দোলন এবং সরকার ও সামরিক বাহিনীর প্রতিক্রিয়া পাকিস্তানের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে। পরিস্থিতি যদি দ্রুত সমাধান করা না হয়, তাহলে দেশজুড়ে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।