২০২৫ সালে বাংলাদেশ থেকে হজ পালনের জন্য সৌদি সরকার কর্তৃক বরাদ্দ কোটা পূর্ণ হয়নি। চলতি বছরের মতো আগামী বছরও সৌদি সরকার বাংলাদেশকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজযাত্রী পাঠানোর সুযোগ দিয়েছে, তবে প্রাথমিক নিবন্ধনের শেষ তারিখে এই কোটা পূর্ণ হয়নি।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) শেষ হওয়া প্রাথমিক নিবন্ধনে ৮৩ হাজার ৫৮৭ জন নিবন্ধন করেছেন, যা গতবারের চূড়ান্ত নিবন্ধন সংখ্যার চেয়ে ১ হাজার ৬৭০ জন কম। সরকার জানিয়েছে, ১৫ জানুয়ারির মধ্যে চূড়ান্ত নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে। নিবন্ধিতদের মধ্যে ৪ হাজার ৯৮০ জন সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে চান, আর বাকি ৭৮ হাজার ৫৪৭ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনা বেছে নিয়েছেন।
সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হজের খরচ কমানো হয়েছে। এবার সাধারণ হজ প্যাকেজের জন্য ৫ লাখ ২৩ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা খাদ্য খরচ অন্তর্ভুক্ত করে। বিশেষ হজ প্যাকেজের খরচ ৬ লাখ ৯৯ হাজার টাকা রাখা হয়েছে। এই খরচের সাথে কোরবানি বাবদ ৭৫০ রিয়াল যোগ করতে হবে।
সরকারি প্যাকেজে উড়োজাহাজ ভাড়া ২৭ হাজার টাকা কমানো হলেও, খরচে বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন হয়নি। সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্যাকেজ-১ এর খরচ ৪ লাখ ৭৮ হাজার ২৪২ টাকা, এবং প্যাকেজ-২ এর খরচ ৫ লাখ ৭৫ হাজার ৬৮০ টাকা। তবে খাবার বাবদ আরও ৪০ হাজার টাকা এবং কোরবানি বাবদ ৭৫০ সৌদি রিয়াল আলাদা করে গুনতে হবে।
এদিকে, ২০২৫ সালের হজের জন্য প্রাথমিক নিবন্ধন শেষ হলেও কোটা পূর্ণ না হওয়ার বিষয়ে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বেশ কিছু কারণে সাধারণ মানুষ হজে যাওয়ার জন্য আগ্রহী নন। এর মধ্যে অন্যতম কারণ হতে পারে খরচের ব্যাপকতা এবং নিবন্ধনের প্রক্রিয়া। তাছাড়া, অনেকের জন্য সৌদি আরবে পৌঁছানোর পর জীবনের অন্যান্য খরচও বাড়তে পারে, যা অনেকেই গ্রহণ করতে চান না।
হজ অনুবিভাগের উপ সচিব মামুন আল ফারুক গণমাধ্যমকে জানান, সৌদি সরকারের কাছে নিবন্ধন তালিকা পাঠানোর জন্য খুব শিগগিরই একটি চূড়ান্ত তালিকা পাঠানো হবে, যেহেতু প্রাথমিক নিবন্ধন সময়সীমা আর বাড়ানো হবে না। এর পাশাপাশি, ২০২৫ সালের হজযাত্রীদের তালিকা আরও দ্রুত প্রস্তুত করা হবে।
এভাবে একদিকে খরচ কমানো, অন্যদিকে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সহজ করা হলেও, পরবর্তী সময়ে আবেদনকারীদের সংখ্যা আরও বাড়বে কিনা, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা সংশয় প্রকাশ করছেন। তবে প্রাথমিক নিবন্ধনের সময়সূচি শেষ হওয়ার পরও অনেকেই আশায় আছেন, পরবর্তী সময়ে আরও আগ্রহী হজযাত্রী যোগ হতে পারে।