জামালপুরে ভুল চিকিৎসায় লিপি বেগম (৩৫) নামে এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার (৪ মার্চ) রাত ৯টায় জামালপুর সদরের নান্দিনা স্টেশনে রোডে তালুকদার ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড হসপিটালে ভাঙচুর চালিয়েছেন এলাকাবাসী ও নিহতের স্বজনরা। নিহত লিপি শ্রীপুর ভালুকা বাজার পূর্বপাড়া গ্রামের ফরিদ মিয়ার স্ত্রী।
এদিকে ঘটনার পর হাসপাতাল থেকে চিকিৎসক, নার্স ও কর্মকর্তারা পালিয়ে গেছেন। অন্যদিকে হাসপাতালের পরিচালক ডা. নাইম তালুকদারকে অবরুদ্ধ করে রাখেন বিক্ষুব্ধরা। সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে জামালপুর সদর থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় বিক্ষুব্ধ জনতা ও নিহতের স্বজনরা তদন্ত কমিটি করে দ্রুত শাস্তির দাবি জানান।নিহতের স্বামী ফরিদ মিয়া বলেন, ভোরে তার স্ত্রীর প্রসব ব্যথা শুরু হলে সকাল ৭টায় তালুকদার ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড হসপিটাল নিয়ে আসি। সেখানে প্রথমে স্বাভাবিক প্রসবের চেষ্টা চালানো হয়। পরে দুপুর ১২টার দিকে চিকিৎসক তাকে সিজার করাতে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যান। সেখানে সুস্থভাবে জন্মগ্রহণ করে নবজাতক। কিন্তু সংকট থেকে যায় মায়ের। অতিরিক্ত রক্তপাতের কারণে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয় তাকে। সেখানে রোগীর অবস্থা আরও খারাপ হলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। এই হাসপাতালেই মৃত্যু হয় মায়ের।
ফরিদ মিয়া অভিযোগ করেন, তালুকদার ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড হসপিটাল কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে ও চিকিৎসক শাহাদাত হোসেনের ভুল চিকিৎসায় প্রাণ গেছে স্ত্রীর।স্থানীয় বাসিন্দা মাসুদ জানান, হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতিকুর রহমান হামিদী লোটাস তালুকদার ও পরিচালক ডা. নাইম তালুকদার অনেক সময় গাইনি সার্জন দিয়ে অপারেশন না করিয়ে নিজেই অপারেশন করতেন। এই হাসপাতালে এর আগেও ভুল চিকিৎসায় একাধিক দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটেছে।
এ বিষয়ে জানতে তালুকদার ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড হাসপাতালের পরিচালক ডা. নাইম তালুকদারকে তার মোবাইলে একাধিকবার কল দেওয়া হলে তা বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এছাড়া জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক শাহাদাৎকে কল দেওয়া হলে নম্বরটি রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু মো. ফয়সল আতিক মোবাইলে জানান, ভাঙচুর হচ্ছে এমন সংবাদ শুনে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ বিষয়ে এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।