২৬ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে ঘটে যাওয়া রহস্যজনক অগ্নিকাণ্ড নিয়ে জরুরি বৈঠক করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠকে অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে প্রধান করে আট সদস্যের একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে একটি প্রাথমিক প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বৈঠক শেষে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে সরকার অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
তদন্ত কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব। কমিটির সদস্যরা, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের প্রধান (সদস্যসচিব)। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি), সশস্ত্র বাহিনীর একজন বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ, বুয়েটের তিনজন বিশেষজ্ঞ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ার, কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ার।
কমিটিকে বিস্ফোরণের কারণ ও উৎস অনুসন্ধান করে প্রাথমিক প্রতিবেদন তিন দিনের মধ্যে এবং পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দ্রুত সময়ে জমা দিতে বলা হয়েছে।
পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান উল্লেখ করেন, সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ড রাষ্ট্রের নিরাপত্তা এবং গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্রের সুরক্ষার প্রশ্নে অত্যন্ত গুরুতর। তদন্তে সহায়তার জন্য গণমাধ্যমকর্মীসহ সবার প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। সরকারের পদক্ষেপের মধ্যে দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। অনেককে চাকরি থেকে সরানো হয়েছে, কেউ ওএসডি হয়েছেন, এবং কেউ কারাগারে রয়েছেন। ফায়ার কর্মীর মৃত্যুর জন্য বৈঠকে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া জানান, অগ্নিকাণ্ডে পাঁচটি মন্ত্রণালয়ের নথি পুড়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত মন্ত্রণালয়গুলো, ডাক ও টেলিযোগাযোগ, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, সড়ক ও যোগাযোগ বিভাগ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ।
সরকার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা যেন ভবিষ্যতে আর না ঘটে তা নিশ্চিত করার জন্য কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। তদন্ত রিপোর্টে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।