ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে, যার প্রভাব পড়েছে ক্রীড়াঙ্গনেও। পাকিস্তানি অলিম্পিক সোনাজয়ী জ্যাভলিন থ্রোয়ার **আরশাদ নাদিমকে ভারত সফরে আমন্ত্রণ জানানোয় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন ভারতীয় তারকা অ্যাথলেট নীরাজ চোপড়া।
গত সোমবার নীরাজ চোপড়া ‘নীরাজ চোপড়া ক্ল্যাসিক’ নামের একটি আন্তর্জাতিক জ্যাভলিন প্রতিযোগিতা আয়োজনের ঘোষণা দেন, যা ২৪ মে বেঙ্গালুরুতে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এতে অংশ নেওয়ার জন্য বিশ্বসেরা অ্যাথলেটদের আমন্ত্রণ জানানো হয়, যার মধ্যে ছিলেন পাকিস্তানের আরশাদ নাদিমও।
নীরাজ বলেন, “সেরা থ্রোয়ারদের আমন্ত্রণ জানিয়ে আমাদের দেশকে একটি বিশ্বমানের ক্রীড়া আয়োজনের গন্তব্যে পরিণত করাই ছিল আমার লক্ষ্য।”
তবে আমন্ত্রণের দুই দিন পরই ঘটে ২২ এপ্রিল পেহেলগাম সন্ত্রাসী হামলা, যেখানে প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এর পরপরই নীরাজ ও তার পরিবার ব্যাপক ঘৃণামূলক মন্তব্য ও আক্রমণের শিকার হন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি খোলা বার্তায় নীরাজ লিখেছেন, “আমি সাধারণত কম কথা বলি। কিন্তু দেশের প্রতি আমার ভালোবাসা এবং পরিবারের সম্মান নিয়ে যখন প্রশ্ন ওঠে, তখন চুপ থাকতে পারি না। নাদিমকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল কেবল একজন অ্যাথলেট হিসেবে, রাজনীতি থেকে দূরে থেকে।”
তিনি আরও বলেন, “আমন্ত্রণ পাঠানো হয়েছিল হামলার দুই দিন আগেই। কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলেছে। বর্তমানে আরশাদ নাদিমের এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের প্রশ্নই আসে না। আমার কাছে সবসময় আগে দেশ।”
২০২৪ প্যারিস অলিম্পিকে সোনা জেতা নাদিমের পেছনে থেকে রুপাজয়ী হওয়া নীরাজের মা সেই সময় বলেছিলেন, “সোনাজয়ী ছেলেটিও আমার ছেলের মতো।”
এই মন্তব্য তখন প্রশংসিত হলেও, বর্তমান পরিস্থিতিতে তা নিয়েও সমালোচনা হচ্ছে।
নীরাজ বলেন, “এক বছর আগের মায়ের কথা নিয়েও আজ আমাদের অপমানিত হতে হচ্ছে। যারা তখন প্রশংসা করেছিলেন, তারাই আজ বিদ্বেষ ছড়াচ্ছেন।”
নীরাজ চোপড়া দীর্ঘদিন ধরে ভারতের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে গৌরব বয়ে এনেছেন। এমন পরিস্থিতিতে নিজের ব্যাখ্যা দিতে বাধ্য হওয়াটা তাকে কষ্ট দিচ্ছে বলে জানান তিনি। “আমি এবং আমার পরিবার দেশকে ভালোবেসে কাজ করছি। দয়া করে আমাদের ক্রীড়া জীবনের ওপর রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করবেন না। আমরা সাধারণ মানুষ, দয়া করে আমাদের রাজনৈতিক প্রতীক বানাবেন না।”