বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ইসকন ইস্যু ও সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতন নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী এবং কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। বিষয়টি কেন্দ্রীয় রাজনীতি এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ইস্যু হিসেবে আলোচনায় এসেছে।
বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মমতা ব্যানার্জী বলেন, “কোনো ধর্মের উপরেই আঘাত আসুক, তা আমি চাই না। এখানে ইসকনের যিনি আছেন, তার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। যেহেতু এটি একটি অন্য দেশের বিষয়, তাই কেন্দ্রীয় সরকারকেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। এই ইস্যুতে আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের পাশেই আছি।”
মমতার এই বক্তব্যে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। বিজেপি নেতা-নেত্রীরা প্রশ্ন তুলেছেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এতদিন নিরব ছিলেন কেন। এর জবাবে মমতা স্পষ্ট করেন যে, কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তাকে তিনি সমর্থন করেন।
এর আগে, তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদ সদস্য সৌগত রায় দিল্লির সংসদ ভবনে এক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “খুবই দুঃখজনক ঘটনা, চিন্তার বিষয়। হিন্দুদের উপর অত্যাচার হওয়া উচিত নয়। আমি এই ঘটনার নিন্দা জানাই।”
কংগ্রেস নেত্রী এবং সদ্য নির্বাচিত সংসদ সদস্য প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার) এ মন্তব্য করেন। তিনি লেখেন, “চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারি ও সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর ক্রমাগত ঘটে চলা সহিংসতার সংবাদ অত্যন্ত চিন্তাজনক।”
প্রিয়াঙ্কা আরও বলেন, “আমি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন করব, এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা হোক এবং সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের কাছে জোরালোভাবে বিষয়টি তুলে ধরা হোক।”
বিজেপি নেতারা বাংলাদেশের ঘটনাবলীর বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মন্তব্য করেছেন। তারা আরও বলেন, বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন এক গভীর আন্তর্জাতিক সমস্যা এবং এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের মনোযোগ আরও বাড়ানো প্রয়োজন।
পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে এই ইস্যুটি কেন্দ্রীয়ভাবে প্রভাব ফেলছে। মমতা ব্যানার্জী এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর মন্তব্যের ফলে ভারত সরকারের অবস্থান আরও সুদৃঢ় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশের ইসকন ইস্যু এবং সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনাগুলো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজর কাড়ছে, যা দুই দেশের সম্পর্কেও প্রভাব ফেলতে পারে।