ফিশিং বোটে সাগর পাড়ি দিয়ে কক্সবাজারের টেকনাফের মেরিন ড্রাইভ হয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছেন ৩৪ জন রোহিঙ্গা, যাদের মধ্যে নারী, পুরুষ ও শিশুও রয়েছে। শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) ভোরে টেকনাফের বাহারছড়ার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর শিলখালী নৌকা ঘাটের দক্ষিণ পাশে ঝাউবন দিয়ে তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের মংডু থেকে পালিয়ে এসে এ সময় সীমান্ত পাড়ি দেন।
প্রথমে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন কেফায়েত উল্লাহ, একজন রোহিঙ্গা। তিনি বলেন, “আরাকান আর্মির দখলে থাকা শহর ও গ্রামে জীবনযাপন কঠিন হয়ে পড়েছে। খাবারের সংকটসহ অনেক সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। আরাকান আর্মির সদস্যরা যুবকদের ধরে নিয়ে ক্যাম্পে নিয়ে যাচ্ছে, যা আমাদের জন্য আরও বিপদজনক হয়ে উঠেছে। তাই আমি আমার পরিবার নিয়ে সাগর পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয়ের জন্য এসেছি।”
রাখাইনে চলমান সংঘর্ষের কারণে রোহিঙ্গারা নিজের নিরাপত্তা ও পরিবার বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হচ্ছেন। কেফায়েত উল্লাহ আরও বলেন, “ফিশিং বোটে চারদিন পাড়ি দেওয়ার পর আমরা বাংলাদেশে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়েছি, তবে পরিস্থিতি এখনও শোচনীয়।”
অনুপ্রবেশের পর, এসব রোহিঙ্গারা বিভিন্ন ক্যাম্পে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানা গেছে। টেকনাফের বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রে ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক শোভন কুমার সাহা এ ব্যাপারে বলেন, “রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের বিষয়ে আমরা এখনও কোনো তথ্য পাইনি। জল ও স্থল সীমান্তের এই বিষয়টি নির্দিষ্ট সংস্থা দেখভাল করে।”
রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশের এই ধারাবাহিকতা শঙ্কার কারণ হয়ে উঠেছে, কারণ বাংলাদেশের কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থানরত লাখ লাখ শরণার্থী আগে থেকেই সংকটের মুখে। এটি বাংলাদেশের সীমান্তের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে, বিশেষ করে সেসব রোহিঙ্গাদের জন্য যারা প্রাণের ভয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন।