গাইবান্ধা শহরে সাঁওতাল নারী ফিলোমিনা হাসদা (৫৫) কে মারধর ও তাঁর বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে আজ (রোববার) সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুপুর ১২টার দিকে, ডিবি রোডের গানাসাস মার্কেটের সামনে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে, শহরের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা প্রদক্ষিণ করে একটি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে সাঁওতাল, বাঙালিসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ অংশ নেয়।
এ কর্মসূচির আয়োজন করে বিভিন্ন সংগঠন, যেমন সাহেবগঞ্জ-বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি, আদিবাসী বাঙালী সংহতি পরিষদ, সামাজিক সংগ্রাম পরিষদ, এএলআরডি, এবং গাইবান্ধার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন জন–উদ্যোগ। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ফিলিমন বাসকে, এবং বক্তব্য রাখেন ওয়াজিউর রহমান, সিরাজুল ইসলাম, প্রবীর চক্রবর্তী, প্রিসিলা মুরমু, জাহাঙ্গীর কবীর, রিকতু প্রসাদ, শ্যামবালা, ব্রিটিশ সরেন, সুচিত্রা মুরমু, গোলাম রব্বানী, সুজন প্রসাদ, কুশলাশীষ চক্রবর্তী, ফারুক কবির, নাজমা বেগম, সাজেদা পারভিন, সুজন রবিদাস, এবং ময়নুল ইসলাম সহ অন্যান্য নেতারা।
গত শুক্রবার, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার রাজাহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও তাঁর লোকজন ফিলোমিনা হাসদা কে মারধর করেন এবং তাঁর বাড়িতে আগুন দেন। মারধরের পর তিনি গুরুতর আহত হয়ে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এই ঘটনায় গতকাল শনিবার রাতে, গোবিন্দগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। এতে চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামসহ সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।
আহত ফিলোমিনার ছেলে ব্রিটিশ সরেন অভিযোগ করেছেন, শুক্রবার সকালে, তাঁদের পৈতৃক জমিতে চেয়ারম্যান মাটি ভরাট শুরু করলে বাধা দেওয়ার পরই তাঁকে মারধর করা হয় এবং এরপরই তার মাকে মারধর করা হয়। এই ঘটনায়, ফিলোমিনা হাসদার বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়।
বক্তারা জানান, স্বাধীনতার পর থেকে সাঁওতালদের প্রায় ২৫০ বিঘা জমি স্থানীয় বাঙালিরা নানা উপায়ে দখল করেছেন, এবং এই সুযোগে চেয়ারম্যান জমি দখলের পাঁয়তারা করছেন। তাঁরা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত রাজাহার ইউপি চেয়ারম্যান এবং অন্যান্য দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
এ ঘটনায়, গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বুলবুল ইসলাম জানিয়েছেন যে, আসামিরা পলাতক রয়েছেন এবং তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ফিলোমিনা হাসদা-এর ছেলে জুলিয়াস সরেন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন, তবে এখনও কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।