জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে শেহাব আলী (৪৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ সময় মো. ইসমাইল (৩২) নামে আরেকজন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার কুলকান্দি ইউনিয়নের জিগাতলা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত শেহাব আলী জিগাতলা গ্রামের জানকী ব্যাপারীর ছেলে। আহত মো. ইসমাইল একই গ্রামের সাত্তার মিয়ার ছেলে এবং বর্তমানে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আজ শুক্রবার দুপুরে ইসলামপুর থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল্লাহ।
ওসি জানান, দীর্ঘদিন ধরে মো. ইসমাইল, নবী, শেহাব আলী, শুক্কুর আলী, সুরমান আলী, সুরত আলী ও সুলতান আলীসহ একটি ডাকাত দল ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ এবং গাইবান্ধার বিভিন্ন এলাকায় জমি দখল, চুরি ও ডাকাতি করে আসছিল। এলাকাবাসী এ নিয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং র্যাবের কাছে একাধিকবার অভিযোগ করেন।
বৃহস্পতিবার রাতে ওই এলাকায় পুলিশ অভিযান চালায়। পালানোর সময় মো. ইসমাইল ও সুরমান আলীকে স্থানীয় জনগণের সহযোগিতায় আটক করে পুলিশ। এ সময় উত্তেজিত জনতা ইসমাইলকে পিটিয়ে আহত করে।
অন্যদিকে, আরেকটি স্থানে জনতা শেহাব আলীকে আটক করে গণপিটুনি দেয়। পুলিশ খবর পেয়ে তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে ইসলামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেহাব আলী মারা যান।
ওসি সাইফুল্লাহ জানান, অভিযানের সময় পুলিশ একটি শটগান এবং আটটি গুলি জব্দ করেছে। নিহত শেহাব আলীর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের কোনো স্বজনকে এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। সুরমান আলীকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে এবং আহত ইসমাইলের চিকিৎসা চলছে।
ওসি আরও জানান, ঘটনাটি নিয়ে থানায় দুটি মামলা করার প্রস্তুতি চলছে। পুলিশের অভিযান ও তদন্তের মাধ্যমে এই ডাকাত দলের অন্যান্য সদস্যদেরও আইনের আওতায় আনার প্রচেষ্টা চলছে।
ডাকাতি ও গণপিটুনির এই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অপরাধীদের ধরতে তৎপর রয়েছে এবং স্থানীয় জনগণকে আইন নিজের হাতে না নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।