জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম শনিবার (২৩ নভেম্বর) বরিশাল জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এক মতবিনিময় সভায় শহীদ পরিবারের প্রতি গভীর সহমর্মিতা ও ন্যায়বিচারের দাবি জানান। বরিশাল বিভাগের শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় তিনি সরকারের বিরুদ্ধে কড়া সমালোচনা করে তাদের কষ্ট ও ক্ষোভের কথা তুলে ধরেন।
সারজিস আলম বলেন, “খুনি হাসিনা ও তার দোসররা সারাজীবন শুধু নিজের পরিবারের জন্য দরদ দেখিয়েছেন। কিন্তু ২০০০ শহীদের পরিবারগুলোর প্রতি তারা কোনো সহানুভূতি দেখাননি। এই পরিবারগুলোর সদস্যরা তাদের প্রিয়জনদের হারিয়ে যে যন্ত্রণা ভোগ করছেন, তা বলে বোঝানো যাবে না।” তিনি আরও যোগ করেন, “আমাদের বোনেরা স্বামী হারিয়েছেন, তাদের সন্তানরা বাবার মুখ দেখার সুযোগ পায়নি। এই পরিস্থিতি দুঃসহ।”
সারজিস শহীদ পরিবারের সদস্যদের অসহনীয় কষ্টের উদাহরণ দিয়ে বলেন, “কিছু মানুষ তাদের কষ্ট প্রকাশ করতে পারে না, আবার কেউ প্রকাশ করলেও তা যথাযথভাবে প্রতিফলিত হয় না। আমাদের দায়িত্ব এই ব্যথা-বেদনা তুলে ধরা।”
সারজিস আলম সরাসরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেন, “১৯৭৫ সালের ঘটনার গল্প তুলে ধরে হাসিনা ক্ষমতা আঁকড়ে ধরেছেন। কিন্তু তিনি কীভাবে ২০০০ মানুষকে হত্যা করেছেন, তার কোনো জবাব নেই।” তিনি আরও দাবি করেন, “এই খুনের ঘটনাগুলোর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বাংলাদেশে থাকার কোনো অধিকার নেই। তাদের বিচার হওয়া উচিত।”
তিনি বলেন, “সরকারের পুনর্বাসনের উদ্যোগ ও ক্ষমতা ধরে রাখার প্রচেষ্টা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। জীবন দিয়ে হলেও আমরা এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেব।”
সভায় বরিশাল বিভাগের ৭৯টি শহীদ পরিবারকে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে পাঁচ লাখ টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়। এই সহায়তা শহীদ পরিবারের কষ্ট কিছুটা লাঘব করবে বলে আশা প্রকাশ করেন ফাউন্ডেশনের নেতারা।
সারজিস আলম এবং অন্যান্য নেতারা যৌক্তিক বিচারের দাবি তুলে ধরে বলেন, “যতদিন এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার না হবে, ততদিন আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।” শহীদ পরিবারের প্রতি তাদের এই অঙ্গীকার এবং আর্থিক সহায়তা তাঁদের পাশে থাকার দৃঢ় প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে।
এই বক্তব্য শহীদ পরিবারের জন্য সহমর্মিতা এবং ন্যায়বিচারের দাবিকে আরও জোরালো করে তুলেছে।