চলতি বছরের (২০২৪) ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। আশঙ্কাজনক তথ্য হলো, এই বছর আক্রান্ত পাঁচজনই মারা গেছেন, যার ফলে মৃত্যুর হার ১০০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ২০২৩ সালে নিপাহ ভাইরাসে ১৩ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন, যাদের মধ্যে ১০ জনের মৃত্যু হয়। সেসময় মৃত্যুর হার ছিল ৭৭ শতাংশ।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর মহাখালীতে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য জানানো হয়।
আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরীন সভায় নিপাহ ভাইরাসের বিস্তার এবং ঝুঁকি নিয়ে একটি তথ্যভিত্তিক উপস্থাপনা দেন। তিনি উল্লেখ করেন, এ বছর আক্রান্ত পাঁচজনের মধ্যে চারজন পুরুষ ও একজন নারী। তাদের মধ্যে দু’জন শিশু। আক্রান্তদের মধ্যে দু’জন মানিকগঞ্জের, আর বাকি তিনজনের বাড়ি খুলনা, শরীয়তপুর ও নওগাঁয়।
বক্তারা জানান, খেজুরের কাঁচা রস নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণের প্রধান উৎস। শীতকালে খেজুরের রস সংগ্রহের সময় বাদুড়ের মাধ্যমে এই ভাইরাস রসে ছড়িয়ে পড়ে এবং তা পান করলে সংক্রমণ ঘটে। বিশেষ করে শীত মৌসুমে নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি থাকে।
নিপাহ ভাইরাস মারাত্মক রোগ সৃষ্টি করে এবং আক্রান্তদের প্রায় ৭১ শতাংশের মৃত্যু হয়। বক্তারা এ ভাইরাসকে “প্রাণঘাতী” হিসেবে উল্লেখ করে জনসচেতনতা বৃদ্ধির আহ্বান জানান।
নিপাহ ভাইরাস থেকে মুক্ত থাকতে খেজুরের কাঁচা রস খাওয়া বন্ধ করতে হবে। ডাক্তার, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষার জন্য মাস্ক ও গ্লাভস ব্যবহার করতে হবে। জনসাধারণকে ভাইরাসের ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন করতে হবে।
বক্তারা বলেন, নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে জনসচেতনতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। শীত মৌসুমে খেজুরের রস খাওয়া বন্ধ করা এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের সঠিক সুরক্ষা নিশ্চিত করাই পারে এই মরণব্যাধি ভাইরাসের বিস্তার কমাতে।