মানুষের ব্যক্তিত্ব ও মানসিক অবস্থা তাঁর পোশাকের ধরন এবং পোশাক বেছে নেওয়ার পদ্ধতির মাধ্যমে প্রকাশ পায়। পোশাকের ধরন দেখে অনেক সময় বোঝা যায় একজন মানুষ কীভাবে চিন্তা করেন, তাঁর অনুভূতি কেমন, কিংবা তিনি নিজেকে এবং অন্যকে কীভাবে উপস্থাপন করতে চান।
যদি কেউ তাঁর সব পোশাক আলমারিতে জমিয়ে রাখেন এবং তা ত্যাগ করতে না পারেন, এর মানে তিনি অতীতের সঙ্গে মানসিকভাবে যুক্ত। এটি বোঝায়, তিনি সহজে ট্রমা কাটিয়ে উঠতে পারেন না। মনোবিদরা এ ধরনের মানুষের জন্য প্রতি তিনটি পোশাকের মধ্যে দুটি ডিক্লাটার করার পরামর্শ দেন।
যদি কেউ শুধুমাত্র নিউট্রাল রঙের পোশাক পছন্দ করেন এবং গয়না বা অনুষঙ্গ পরতে না চান, এর অর্থ তিনি স্বভাবে অন্তর্মুখী। তিনি পোশাকের মাধ্যমে অন্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চান না। মনোবিদরা মাঝেমধ্যে ছোটখাটো গয়না বা হালকা প্রিন্টের পোশাক বেছে নিতে উৎসাহিত করেন।
ওভারড্রেসিংয়ের অর্থ হতে পারে, কেউ নিজেকে নিয়ে আত্মবিশ্বাসী নন। তাঁরা পোশাক ও অনুষঙ্গের আড়ালে নিজের শরীর এবং ব্যক্তিত্ব লুকিয়ে রাখতে চান। এ ধরনের মানুষের জন্য আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
মানুষ তাঁর মানসিক বয়স অনুসারে পোশাক বেছে নেন। কেউ যদি তরুণদের মতো পোশাক পরেন, তবে তিনি মানসিকভাবে তরুণ। আবার পরিণত বয়সের পোশাক পরা মানে তিনি মানসিকভাবে পরিণত।
যদি কেউ সব সময় ফরমাল পোশাকেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন, এর অর্থ তিনি করপোরেট জীবনের প্রতি অত্যন্ত সিরিয়াস। কাজ ও ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে ভারসাম্য আনতে তাঁকে উৎসাহিত করা যায়।
যদি কেউ অনুষ্ঠানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ পোশাক পরতে না চান, এর অর্থ তিনি প্রথাবিরোধী। তিনি সামাজিক রীতিনীতি কিংবা নিয়মের তোয়াক্কা না করে নিজের নিয়মে চলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।
যদি কেউ সব সময় ডিজাইনার পোশাক, লোগোযুক্ত ব্যাগ বা ঘড়ি ব্যবহার করেন, এর অর্থ তিনি নিজের ব্যক্তিত্বের চেয়ে আর্থিক অবস্থার মাধ্যমে পরিচিত হতে চান। এই মানুষেরা বিশ্বাস করেন যে আর্থিক অবস্থা দিয়ে মানুষকে মূল্যায়ন করা হয়।
অনেকে মায়ের পুরোনো শাড়ি বা বাবার সোয়েটারে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। তাঁরা নিজেদের চেয়ে পরিবারের প্রয়োজনকে বেশি অগ্রাধিকার দেন। মনোবিদরা তাঁদেরকে ‘মি টাইম’–এর ওপর গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ দেন।
মনের বিষণ্নতা কাটাতে উজ্জ্বল রঙের পোশাক পরা, হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল করা এবং পরিপাটি থাকা কার্যকর হতে পারে। কমলা, হলুদ, সবুজ কিংবা নিয়নের মতো রং মনকে প্রফুল্ল রাখতে সাহায্য করে।
পোশাক শুধু শারীরিক প্রয়োজন মেটায় না, এটি মানসিক অবস্থা ও ব্যক্তিত্বের প্রতিফলনও। সঠিক পোশাক বেছে নেওয়া এবং তা বুঝে পরিধান করার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি তাঁর মানসিক ও আবেগগত অবস্থানকে আরো সুসংহত করতে পারেন।