ফিলিপাইনের ভাইস প্রেসিডেন্ট সারা দুতার্তে সম্প্রতি নিজের উপর হামলার সম্ভাবনা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। তিনি প্রকাশ্যে বলেন, যদি তাকে হত্যা করা হয়, তাহলে ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট, প্রথম মহিলা এবং প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকারকেও হত্যা করা হবে। সারা দুতার্তের এই উক্তি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার শক্তিশালী রাজনৈতিক দুই পরিবার, মার্কোস ও দুতার্তে পরিবারের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
গত শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে সারা দুতার্তে বলেন, “আমি একজনের সঙ্গে কথা বলেছি, এবং আমি বলেছি, যদি আমাকে হত্যা করা হয়, তাহলে প্রেসিডেন্ট, ফার্স্ট লেডি এবং স্পিকারকেও হত্যা করা হবে। এটি তামাশা নয়, কোনো রসিকতা নয়।”
দুই দিন পর, সোমবার (২৫ নভেম্বর) ফিলিপাইনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ “বংবং” মার্কোস তার প্রতিক্রিয়া জানাতে এগিয়ে আসেন। তিনি তার জাতির উদ্দেশে রেকর্ড করা ভাষণে বলেন, এমন ধরনের “অপরাধমূলক পরিকল্পনা” উপেক্ষা করা উচিত নয়। যদিও তিনি সারা দুতার্তের নাম উল্লেখ করেননি, তিনি বলেন, “আমাদের কয়েকজনকে মেরে ফেলার জন্য বেপরোয়া অশ্লীল গালিগালাজ ও হুমকি দেওয়া হচ্ছে।” মার্কোস বলেন, এই ধরনের “অপরাধমূলক প্রচেষ্টা” কখনোই চলতে দেওয়া উচিত নয় এবং তিনি তাদের বিরুদ্ধে “লড়াই করার” অঙ্গীকার করেছেন।
তিনি আরও বলেন, “যদি প্রেসিডেন্টকে হত্যার পরিকল্পনা এত সহজ হয়, তাহলে সাধারণ নাগরিকদের জন্য আর কী থাকবে?”
মার্কোসের বক্তব্যের পর সারা দুতার্তে সাংবাদিকদের জানান, তিনি এখনও প্রেসিডেন্টের বক্তব্য শুনেননি, তবে পরবর্তীতে এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাবেন।
এদিকে, ফিলিপাইনের সামরিক প্রধান জেনারেল রোমিও ব্রাওনার একটি বিবৃতি জারি করেছেন, যেখানে তিনি বলেছেন, “ফিলিপাইনের ১৬০,০০০ সদস্যের সশস্ত্র বাহিনী আমাদের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান এবং বেসামরিক কর্তৃত্বের প্রতি সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা রেখে নির্দলীয় থাকবে।” তিনি দেশবাসীকে শান্ত হওয়ার এবং সমাধানের আহ্বান জানান। ব্রাওনার বলেন, “যারা আমাদের মধ্যে বিভাজনের চেষ্টা করবে, তাদের বিরুদ্ধে একসাথে দাঁড়ানোর প্রয়োজনীয়তা আমরা পুনর্ব্যক্ত করছি।”
ফিলিপাইনের রাজনৈতিক অঙ্গনে মার্কোস-দুতার্তে পরিবারের মধ্যে এই উত্তেজনা এক নতুন দিক নিয়েছে। সারা দুতার্তের হত্যার হুমকি এবং মার্কোসের প্রতিক্রিয়ার পর, দেশটি এক কঠিন রাজনৈতিক সংকটের সম্মুখীন হতে পারে। সামরিক প্রধানের আশ্বাস এবং দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি শ্রদ্ধার কথা শোনা গেলেও, এই পরিস্থিতি দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের উপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।