সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশি ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার ভারতে উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। অন্যদিকে থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরে এর ব্যবহার বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, গত অক্টোবরে ভারতে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশিদের খরচ গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪০ শতাংশ কমে গেছে।
২০২২ সালের অক্টোবরে ভারতে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে খরচ ছিল প্রায় ৯০ কোটি ২০ লাখ টাকা, যা ২০২৩ সালের একই সময়ে কমে ৫৩ কোটি ৮০ লাখ টাকায় নেমে এসেছে। বিদেশে বাংলাদেশি ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে মোট খরচের মধ্যে ভারতের অংশ ছিল আগের বছর ১৬ শতাংশ, যা এ বছর কমে দাঁড়িয়েছে ১০.৭৮ শতাংশে।
বাংলাদেশে মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল জানিয়েছেন, ভারতের ভিসা সীমাবদ্ধতার কারণে দেশটিতে ভ্রমণ প্রায় ৯০ শতাংশ কমে গেছে। ভারতীয় হাইকমিশন বর্তমানে শুধুমাত্র জরুরি প্রয়োজন এবং চিকিৎসার ক্ষেত্রে ভিসা দিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, “রোগীদের এখন চিকিৎসকের কাছ থেকে লিখিত অনুমতি নিতে হচ্ছে। এ কারণে অনেকে চিকিৎসার জন্য ভারতে না গিয়ে কক্সবাজার বা থাইল্যান্ডে যাচ্ছেন। যারা আগে মুম্বাই বা কলকাতায় ভ্রমণ করতেন, তারা এখন সিঙ্গাপুর, নেপাল বা মালয়েশিয়ার মতো দেশে যাচ্ছেন।”
ভ্রমণ ও চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুর এখন বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য জনপ্রিয় গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। এই দুই দেশে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে খরচ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। ভিসা সহজলভ্য হওয়া এবং উন্নত চিকিৎসাসেবা থাকায় থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে।
ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানিয়েছেন, বাংলাদেশিদের জন্য পর্যটন ভিসা চালু করা এখনই সম্ভব নয়। শুধু জরুরি প্রয়োজন এবং চিকিৎসার জন্য সীমিত ভিসা কার্যক্রম চলছে।
২০২৩ সালের আগস্টে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন ও অন্তর্বর্তী সরকারের গঠনের পর ভিসা কার্যক্রম সীমাবদ্ধ করার ঘোষণা আসে। ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাও পর্যটন ভিসা স্থগিত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, ভিসা সহজলভ্য হলে ভারতে ভ্রমণ ও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার পুনরায় বাড়তে পারে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, নেপাল এবং মালয়েশিয়া বাংলাদেশি পর্যটক ও রোগীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্য হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।