ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়িতে বাংলাদেশি পর্যটকদের অভাবে চরম অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিয়েছে। হোটেল, পরিবহন ও পর্যটন খাতের স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাংলাদেশি নাগরিকদের উপস্থিতি কমে যাওয়ায় এই শিল্পগুলোতে ভয়াবহ মন্দা নেমে এসেছে।
ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআই বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে জানায়, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপোড়েন শিলিগুড়ির অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছে। ভিসা জটিলতার কারণে বাংলাদেশি পর্যটকদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।
শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং ও কালিম্পং যাওয়ার পথে বাংলাদেশি পর্যটকদের সাধারণত যাত্রা বিরতি দেখা যেত। কিন্তু এখন হোটেল ও পরিবহন খাতগুলো কার্যত পর্যটকশূন্য। স্থানীয় বাস সার্ভিস অপারেটর শিবপ্রসাদ ঘোষ জানান, “আগে শিলিগুড়ি-ঢাকা বাসগুলো বাংলাদেশি পর্যটকে পূর্ণ থাকত। কিন্তু বর্তমানে বাসগুলো একেবারে ফাঁকা।”
হোটেল ব্যবসায়ী বিপিন কুমার গুপ্তা বলেন, “বাংলাদেশি পর্যটকদের অনুপস্থিতি আমাদের আয়ের উৎসে সরাসরি আঘাত হেনেছে। দীর্ঘদিন ধরে এ অবস্থা চলতে থাকলে অনেকেই তাদের জীবিকা হারাবেন।” অপর ব্যবসায়ী বিকাশ দাস বলেন, “দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক হলে উভয় দেশই উপকৃত হবে। বর্তমান পরিস্থিতি শুধু অর্থনৈতিক নয়, সামাজিকভাবেও ক্ষতিকর।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক অস্থিরতা এই সংকটের মূল কারণ। ভিসা সংক্রান্ত জটিলতা এবং দ্বিপাক্ষিক আলোচনা স্থগিত থাকায় ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।
শিলিগুড়ির ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যেন দুই দেশের মধ্যে চলমান সমস্যা দ্রুত সমাধান করা হয়। তারা বিশ্বাস করেন, ভিসা সমস্যার সমাধান এবং কূটনৈতিক আলোচনার পুনরায় সূচনা শিলিগুড়ির অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
শিলিগুড়ি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রবেশপথ এবং নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশের সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও পর্যটনের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। তবে বাংলাদেশি পর্যটকদের অভাবে এই অঞ্চল তার গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ভূমিকা হারানোর শঙ্কায় রয়েছে।