যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে ভয়াবহ দাবানলে বিস্তীর্ণ এলাকা পুড়ে গেছে। এই দাবানল দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার মূল কারণ হিসেবে সান্তা অ্যানা নামের ঝোড়ো বাতাসকে দায়ী করা হয়েছে। যদিও সম্প্রতি বাতাসের গতি কিছুটা কমেছে, তবে ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিসের পূর্বাভাস বলছে, আগামী ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে।
ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী, লস অ্যাঞ্জেলেস ও ভেনচুরা কাউন্টিতে স্থানীয় সময় সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত বাতাসের গতি ঘণ্টায় ৩০ মাইল থেকে ৭০ মাইল পর্যন্ত বাড়তে পারে। বাতাসের এই তীব্র গতি দাবানল ছড়ানোর অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে কাজ করছে।
বাতাসের তীব্রতা এবং আর্দ্রতার অভাবের কারণে আগুন আগের চেয়েও দ্রুত নতুন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে। এমন অবস্থায় স্থানীয় প্রশাসন বাসিন্দাদের ঘর ছেড়ে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছে।
লস অ্যাঞ্জেলেসে চলমান দাবানলে প্রাণহানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪ জনে। দাবানলে এখন পর্যন্ত পুড়ে গেছে ৫৬ একর জায়গা। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৬৪ বর্গ কিলোমিটারের বেশি এলাকা এবং ধ্বংস হয়েছে ১২ হাজারেরও বেশি অবকাঠামো।
লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টির ফায়ার ডিপার্টমেন্ট চিফ অ্যানথনি ম্যারোন জানিয়েছেন, বুধবার পর্যন্ত দাবানলের তীব্রতা অব্যাহত থাকবে। তিনি জানান, নির্দিষ্ট এলাকাগুলোর ফায়ার ডিপার্টমেন্ট এবং নিরাপত্তাকর্মীদের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করতে হবে।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন থামানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে তীব্র বাতাসের কারণে তারা বেশ বেগ পাচ্ছেন। কর্মকর্তারা বলেছেন, জ্বলতে থাকা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে এখনও বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
দাবানলের ভয়াবহতা বাড়ায় স্থানীয় প্রশাসন ভেনচুরা কাউন্টিসহ আশপাশের এলাকা থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। প্রশাসন বলেছে, বাসিন্দাদের দ্রুততার সঙ্গে সরিয়ে নিতে না পারলে আরও প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে।
ক্যালিফোর্নিয়ার ফরেস্ট্রি ও ফায়ার প্রোটেকশন বিভাগের তথ্যমতে, পুরো রাজ্যে বর্তমানে ১২৪টি ছোট-বড় দাবানল চলমান। এ পর্যন্ত দাবানলে প্রায় ১৬৪ বর্গ কিলোমিটার এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ধ্বংস হয়েছে ১২ হাজারেরও বেশি অবকাঠামো।
ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস আগাম সতর্কবার্তা দিয়েছে যে, আগামী কয়েক দিনে আর্দ্রতা আরও কমে যেতে পারে এবং বাতাসের গতি বাড়তে পারে। এতে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে। প্রশাসন বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে এবং জরুরি প্রয়োজনে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে বলেছে।
এই দাবানল যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনতে দমকল কর্মীরা দিনরাত পরিশ্রম করছেন। তবে পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক হয়নি এবং নতুন নতুন এলাকা আগুনের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।