বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ভারতের সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা (অনলাইন)-এ প্রকাশিত বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদনকে ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উল্লেখ করেছে। আজ শনিবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো এক প্রতিবাদলিপিতে এ বিষয়ে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।
গতকাল আনন্দবাজার পত্রিকা-তে প্রকাশিত “উর্দিতে বাঙালি গণহত্যার রক্তের ছিটে! ৫৩ বছর পর বাংলাদেশে ফিরছে সেই পরাজিত পাক ফৌজ” শিরোনামের প্রতিবেদনে দাবি করা হয় যে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সদস্যরা প্রশিক্ষণের জন্য বাংলাদেশে আসছে।
আইএসপিআরের প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, এই তথ্য ভিত্তিহীন এবং বাস্তবতার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কোনো সেনানিবাসে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষক দল বা প্রতিনিধিদলের আসার কোনো পরিকল্পনা নেই।
প্রতিবাদলিপিতে আরও জানানো হয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পেশাদারিত্ব, নিরপেক্ষতা এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার নীতিতে অটল। নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সেনাবাহিনী বিভিন্ন দেশের সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখে। এর মধ্যে ছাত্র বিনিময়, প্রশিক্ষণ এবং পারস্পরিক বোঝাপড়া ও দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে নানা কর্মসূচি পরিচালনা করে।
আইএসপিআরের পক্ষ থেকে বলা হয়, এই প্রতিবেদনের আগে আনন্দবাজার পত্রিকা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য বা ব্যাখ্যা নেয়ার প্রয়োজন মনে করেনি। তাদের এই উপেক্ষা সাংবাদিকতার নিরপেক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তোলে।
এ বিষয়ে আইএসপিআর জানায়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তথ্যের স্বচ্ছতা ও সঠিক তথ্য প্রচারের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। গণমাধ্যমকে তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের আহ্বান জানানো হয়।
প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত যেকোনো বিষয়ে দায়িত্বশীল আচরণ ও সঠিক তথ্য প্রচারের ওপর গুরুত্বারোপ করে আইএসপিআর জানায়, সংবেদনশীল প্রতিরক্ষা বিষয়ে অজ্ঞতাপ্রসূত মতামত অযাচিত এবং আপত্তিকর।
আইএসপিআর জানায়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিভিন্ন দেশের সঙ্গে প্রয়োজন অনুযায়ী গোলাবারুদ সংগ্রহসহ অন্যান্য প্রতিরক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে থাকে। তবে এ বিষয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আনন্দবাজার পত্রিকা-র প্রতিবেদনের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সঠিক এবং বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচারের আহ্বান জানিয়েছে। সেনাবাহিনীর তথ্য প্রকাশের প্রক্রিয়া স্বচ্ছ এবং গণমাধ্যমের সাথে দায়িত্বশীল সম্পর্ক বজায় রাখার প্রতি তারা অঙ্গীকারবদ্ধ।