অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী সদ্যপ্রয়াত ড. মনমোহন সিংয়ের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছেন। ৩১ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার, সকাল ১১টায় ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনে তিনি ড. মনমোহন সিংয়ের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এই সময়, তিনি হাইকমিশনে খোলা শোক বইতেও শোকবার্তা লিখে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে শ্রদ্ধা জানায়।
ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা ড. ইউনূসকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “আমরা অত্যন্ত দুঃখিত যে আমাদের বন্ধু এবং ভারতীয় জাতির শ্রদ্ধেয় নেতা ড. মনমোহন সিং আর আমাদের মাঝে নেই।” প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস হাইকমিশনারের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত আলাপে ড. মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বের স্মৃতি নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, “তিনি ছিলেন এক অত্যন্ত সরল এবং প্রজ্ঞাবান ব্যক্তি। তাঁর অবদান ভারতকে বৈশ্বিক অর্থনীতির পরাশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে ছিল অপরিসীম।”
ড. ইউনূস আরও বলেন, “মনমোহন সিংয়ের নেতৃত্ব ভারতকে অর্থনৈতিকভাবে দৃঢ় অবস্থানে পৌঁছাতে সাহায্য করেছে। তার দূরদর্শিতা ও অর্থনৈতিক নীতি ভারতকে একটি বৈশ্বিক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।”
ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং গত ২৬ ডিসেম্বর দিল্লির একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর তিনি এই পৃথিবী থেকে চলে যান। তাঁর মৃত্যু ভারতসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া ফেলেছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনূস তার বক্তব্যে ড. মনমোহন সিংয়ের নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, “মনমোহন সিং ভারতের অর্থনৈতিক পুনর্গঠন এবং বিশ্বব্যাপী অর্থনীতির ক্ষেত্রে ভারতকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তার এই অবদান ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থাকবে।”
ড. ইউনূসের এই শোকজ্ঞাপন এবং মনমোহন সিংয়ের স্মৃতিচারণ ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের প্রতিফলন, যা দুই দেশের জনগণের মাঝে ঐক্য এবং সহযোগিতা প্রতিষ্ঠার পথে একটি নতুন দিগন্তের সূচনা করতে পারে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শোকজ্ঞাপন ও শ্রদ্ধা নিবেদন প্রমাণ করেছে যে, আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নেতৃত্বের গুরুত্ব কতটা অপরিসীম। ড. মনমোহন সিং ভারতীয় রাজনীতির এক কিংবদন্তি নেতা হিসেবে তার দৃষ্টিনন্দন কাজের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তাঁর অবদান শুধু ভারতীয় নয়, পৃথিবীর সব দেশই সেলিব্রেট করবে।