ভারতীয় হাসপাতালগুলোতে বিদেশি রোগীদের সংখ্যা এখন প্রায় অর্ধেকে নেমে গেছে, যার অন্যতম কারণ বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া কমিয়ে দেওয়া। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা সম্প্রতি এই বিষয় নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রোগীদের জন্য ভিসা কার্যক্রম সীমিত হয়ে যাওয়ার কারণে ভারতের চিকিৎসা খাত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতীয় হাসপাতালগুলোতে সাধারণত প্রতি বছর ২০ লাখ বিদেশি রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন, যার মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশই বাংলাদেশি। তবে ২০২৩ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে বাংলাদেশি রোগীদের সংখ্যা ৮০ শতাংশ কমে গেছে। এর ফলে ভারতীয় হাসপাতালগুলোর জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি হয়েছে, এবং বিদেশি রোগীদের আগমন কমে যাওয়ায় সেগুলোর আয়ও হ্রাস পেয়েছে।
ভারতের চিকিৎসা খাতে ‘মেডিকেল ট্যুরিজম’ বা চিকিৎসা সফর থেকে বড় ধরনের আয়ের আশা করা হয়। ২০২৩ সালে এই খাত থেকে ভারতীয় অর্থনীতিতে ৯০০ কোটি মার্কিন ডলার বা প্রায় ৭৭ হাজার ১৮৯ কোটি রুপি আয় হয়। কিন্তু বাংলাদেশি রোগীদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া সীমিত হওয়ায় এই আয় এখন মারাত্মকভাবে কমে গেছে।
বাংলাদেশে ভারতীয় ভিসা কেন্দ্রের এক কর্মকর্তার তথ্য অনুযায়ী, সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে ভারতের পাঁচটি ভিসা কেন্দ্রে দৈনিক অনলাইন ভিসা স্লটের সংখ্যা সাত হাজার থেকে কমিয়ে ৫০০ করা হয়েছে। এর ফলে ভিসা সংগ্রহে আসা বাংলাদেশি রোগীরা এখন বিপাকে পড়েছেন।
ভারতের শীর্ষস্থানীয় হাসপাতালগুলোও এই ভিসা সীমাবদ্ধতার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কলকাতার মাল্টি-স্পেশালটি পিয়ারলেস হাসপাতালের বহির্বিভাগে আগে প্রতিদিন ১৫০ বাংলাদেশি রোগী চিকিৎসা নিতেন, কিন্তু এখন সেই সংখ্যা ৩০-এর নিচে নেমে এসেছে। এছাড়া বেঙ্গালুরুর নারায়ণ হেলথ, চেন্নাইয়ের অ্যাপোলো হাসপাতাল এবং ভেলোরের ক্রিশ্চিয়ান মেডিকেল কলেজ (CMC) এর মতো হাসপাতালগুলোও ভিসা সীমাবদ্ধতার কারণে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।
এই সংকটের ফলে ভারতের স্বাস্থ্যখাতের মধ্যে বড় ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হতে চলেছে, এবং বাংলাদেশের রোগীদের জন্য দ্রুত এই সমস্যা সমাধান করা না হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।