ভারতের মহারাষ্ট্রে অবৈধ বাংলাদেশিদের জন্য ডিটেনশন সেন্টার বা আটক কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিস। শনিবার (২১ ডিসেম্বর) ভারতের সংবাদ সংস্থা এএনআই প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা যায়।
মুম্বাইয়ে একটি আধুনিক ডিটেনশন সেন্টার নির্মাণের পরিকল্পনার পেছনে মূল কারণ হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী জানান, অবৈধ অভিবাসীদের সরাসরি জেলে রাখা আইনসম্মত নয়। এজন্য তাদের পৃথক একটি স্থানে রাখতে হবে।
দেবেন্দ্র ফড়নবিস বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে মাদক এবং অবৈধ অনুপ্রবেশের সঙ্গে যুক্ত অনেককে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। তাদের মধ্যে অবৈধ বাংলাদেশির সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য। তারা বিদেশি নাগরিক, তাই তাদের জেলে না রেখে ডিটেনশন সেন্টারে রাখা প্রয়োজন। বৃহন্মুম্বাই মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন (বিএমসি) আমাদের জমি দিলেও তা ডিটেনশন সেন্টারের জন্য নির্ধারিত নিয়ম পূরণ করেনি। এজন্য আমরা নতুন জমির দাবি জানিয়েছি, যেখানে একটি ভালো মানের ডিটেনশন সেন্টার নির্মাণ করা হবে।”
এর আগে মহারাষ্ট্রের থানে জেলার কল্যাণ এলাকা থেকে অবৈধভাবে বসবাসকারী এক বাংলাদেশি দম্পতিকে গ্রেপ্তারের ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। থানে পুলিশের মানব পাচারবিরোধী সেলের অভিযানে সবুজ সানোয়ার শেখ এবং বিশতি সবুজ শেখ নামে ওই দম্পতিকে আটক করা হয়।
পুলিশ জানায়, এই দম্পতি অবৈধভাবে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত অতিক্রম করে মহারাষ্ট্রে বসবাস করছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে পাসপোর্ট আইন এবং ফরেনার্স অ্যাক্টের বিভিন্ন ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মহারাষ্ট্র সরকার মনে করছে, অবৈধ অভিবাসীদের সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনার জন্য ডিটেনশন সেন্টার একটি জরুরি পদক্ষেপ। মুম্বাইয়ের মতো বড় শহরে অবৈধ অভিবাসনের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে আনতে এ পদক্ষেপ কার্যকর ভূমিকা পালন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভারতে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ এবং ডিটেনশন সেন্টার নির্মাণের পরিকল্পনা বর্তমান সরকারের আগ্রাসী নীতিরই প্রতিফলন। বিশেষ করে বাংলাদেশি অভিবাসীদের নিয়ে ভারত সরকারের মনোভাব বরাবরই প্রশ্নবিদ্ধ। এই ধরনের উদ্যোগ দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
বর্তমানে মুম্বাইয়ে ডিটেনশন সেন্টার নির্মাণের জমি নির্বাচন প্রক্রিয়া চলছে। এ নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে বিএমসির আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। আটক বাংলাদেশি দম্পতিকে থানে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।