1. [email protected] : Hossain Monir : Hossain Monir
  2. [email protected] : RT BD NEWS : RT BD NEWS
  3. [email protected] : RT BD NEWS :
মার্কিন মোটেল ব্যবসায় গুজরাটি প্যাটেলদের আধিপত্য: কীভাবে শুরু হলো? - RT BD NEWS
সোমবার, ০৫ মে ২০২৫, ০৭:২৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
ইরানের নতুন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ‘কাসেম বাসির’ উন্মোচন খালেদা জিয়ার দেশে প্রত্যাবর্তনে ডিএমপির বিশেষ ট্রাফিক নির্দেশনা নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ১০টি ডাকাতি ঘটনায় ভয়াবহ পরিস্থিতি গণতান্ত্রিক সংস্কার ও আত্মনির্ভর বাংলাদেশ গড়ার সময় এখনই কোরবানির পশুর চামড়ার ন্যায্য মূল্য নিশ্চিতের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার অপতথ্য ও গুজব সামাজিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করে: মাহফুজ আলম ফতুল্লায় অনুমতি ছাড়াই মেলার নামে জুয়া ও মাদকের আসর জামালপুরে ধানে ব্লাস্ট রোগ: বিআর-২৮ ও ২৯ জাতের ধান ক্ষতির মুখে এপ্রিল ২০২৫-এ রেমিট্যান্সে বড় উল্লম্ফন: এসেছে ২৭৫ কোটি ডলার মুজিবনগর সীমান্তে ১০ বাংলাদেশি আটক

মার্কিন মোটেল ব্যবসায় গুজরাটি প্যাটেলদের আধিপত্য: কীভাবে শুরু হলো?

আরটি বিডিনিউজ অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত: শনিবার, ৪ জানুয়ারি, ২০২৫
মার্কিন মোটেল ব্যবসায় গুজরাটি প্যাটেলদের আধিপত্য

যুক্তরাষ্ট্রের মোটেল ব্যবসায় গুজরাটি সম্প্রদায়ের আধিপত্য এতটাই প্রভাবশালী যে অনেকে মজা করে এই ব্যবসাকে ‘প্যাটেল মোটেল কার্টেল’ বলে অভিহিত করেন। কঠোর পরিশ্রম, স্মার্ট ব্যবসা কৌশল এবং সম্প্রদায়ের সহযোগিতার মাধ্যমে এই আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। গুজরাটিদের এই সফলতার গল্প শুরু হয়েছিল ১৯৪০-এর দশকে, যা এখন মার্কিন হোটেলশিল্পের একটি বিশাল অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে।

গুজরাট থেকে যুক্তরাষ্ট্রে মোটেল ব্যবসায় গুজরাটিদের যাত্রা শুরু হয় ১৯৪২ সালে। কাঞ্জিভাই মানছু দেশাই নামের এক গুজরাটি ক্যালিফোর্নিয়ার স্যাক্রামেন্টোতে একটি ছোট মোটেলের দায়িত্ব নিয়ে শুরু করেন এই পথচলা।

৩২ কক্ষের ওই হোটেলটি আগে চালাতেন এক জাপানি-আমেরিকান। দেশাইয়ের পরিশ্রম ও ব্যবসায়িক দক্ষতায় সেই হোটেলটি লাভজনক হয়ে ওঠে। পরে তিনি সান ফ্রান্সিসকোতে গিয়ে ‘হোটেল গোল্ডফিল্ড’ চালু করেন এবং সেখানে আরও গুজরাটিদের যুক্ত করেন।

১৯৬৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ন্যাশনালিটি অ্যাক্ট চালু হলে, দেশাইয়ের মতো আরও অনেক গুজরাটি যুক্তরাষ্ট্রে আসার সুযোগ পান। এ সময় গুজরাটিরা বিভিন্ন দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। বেশিরভাগই এসেছিলেন উগান্ডা থেকে।

উগান্ডার একনায়ক ইদি আমিন ১৯৭০-এর দশকে ৫৫ হাজার ভারতীয়কে দেশ ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করেন। সেই সময় উগান্ডা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমায় গুজরাটিরা। এছাড়াও, পাকিস্তান ও ব্রিটেন থেকেও অনেকে আসেন।

গুজরাটিরা সব সময় পারিবারিক ও সম্প্রদায়ভিত্তিক ব্যবসা কৌশলে বিশ্বাসী। কাঞ্জিভাই দেশাই যখন মোটেল ব্যবসা শুরু করেন, তখন তিনি বলেন, ‘আপনি যদি একজন প্যাটেল হন, তাহলে একটি হোটেলের লিজ নিন।’

গুজরাটিরা একে অপরকে সাহায্য করতে পিছপা হন না। তাঁরা নিজেদের সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর এতটাই বিশ্বাস করেন যে অর্থ ধার দিতে কোনো জামানত কিংবা লিখিত চুক্তির প্রয়োজন হয় না। ‘হ্যান্ডশেক ডিল’ বা হাত মেলানোর মাধ্যমে তাঁরা ব্যবসায়িক চুক্তি করেন।

মিশিগানের ছোট একটি মোটেলের মালিক গ্যারি প্যাটেল বলেন, ‘প্যাটেলদের ৪০ শতাংশ একে অপরকে চেনেন। যখন কেউ একটি হোটেল কিনতে যান, তখন কোনো না কোনো প্যাটেল তাঁকে ডাউনপেমেন্টের টাকা ধার দিয়ে সাহায্য করেন। কেউ না কেউ আপনার অংশীদার হয়ে যাবেন।’

গুজরাটিরা নিজেদের সংস্কৃতির অংশ হিসেবে ‘অতিথি দেবো ভাবা’—অর্থাৎ, অতিথি ভগবান—এই ধারণা ধারণ করেন। তাঁদের হোটেল ব্যবসার মূলমন্ত্র হলো অতিথিদের সর্বোত্তম সেবা নিশ্চিত করা।

বিনয় প্যাটেল নামের দ্বিতীয় প্রজন্মের এক গুজরাটি ওয়াশিংটনের স্টারলিং এলাকায় একটি হলিডে ইন পরিচালনা করেন। তিনি বলেন, ‘আমার বাবা-মা হোটেল বানিয়ে কিছুদিন পরিচালনা করার পর সেগুলো বিক্রি করে দিতেন। কম খরচে হোটেল তৈরি করে ভালো দামে বিক্রি করার এই কৌশল তাঁদের বড় লাভ এনে দিত।’

গুজরাটিদের মোটেল ব্যবসা ক্রমে এতটাই বিস্তৃত হয় যে ২০০৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মোট মোটেলের ৪২ শতাংশ গুজরাটিদের মালিকানায় ছিল। ৫২ হাজার মোটেলের মধ্যে ২১ হাজারের মালিক ছিলেন গুজরাটি।

এশিয়ান আমেরিকান হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন (AAHOA) প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৮৯ সালে। এই সংগঠন ৩৬ হাজারের বেশি হোটেলের প্রতিনিধিত্ব করে। এ সংগঠনের সদস্যদের মালিকানায় থাকা হোটেলগুলোতে ১১ লাখের বেশি কর্মী কাজ করেন।

AAHOA-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংগঠনের সদস্যরা বছরে প্রায় ৫ হাজার কোটি ডলার খরচ করেন এবং তাঁদের হাতে রয়েছে ১ লাখ কোটি ডলারের সম্পত্তি।

যুক্তরাষ্ট্রের মোটেল ব্যবসায় কাঞ্জিভাই মানছু দেশাইয়ের অবদান উল্লেখযোগ্য। তিনি ভারতীয়-আমেরিকানদের মধ্যে অতিথিসেবা ব্যবসার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

২০০৩ সালে তাঁকে আমেরিকান হোটেল অ্যান্ড লজিং অ্যাসোসিয়েশন তাদের হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত করে। ২০০৬ সালে মৃত্যুর পর তাঁকে এলিস আইল্যান্ড মেডাল অব অনার প্রদান করা হয়।

গুজরাটিদের হোটেল ব্যবসায় সফল হওয়ার পেছনে তিনটি মূল কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে, কঠোর পরিশ্রম – তাঁরা যেকোনো কাজ করতে পিছপা হন না। স্মার্ট ব্যবসা কৌশল – তাঁরা নতুন সুযোগ চিহ্নিত করতে ও সেটি কাজে লাগাতে দক্ষ। সম্প্রদায়ের সহযোগিতা – পরিবার ও সম্প্রদায়ের মানুষদের সঙ্গে মিলে ব্যবসা পরিচালনায় তাঁরা সফল।

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 𝑹𝑻 𝑩𝑫 𝑵𝑬𝑾𝑺 আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট