প্রায় এক শতাব্দী পর মিসরের লুক্সরে একটি রাজ সমাধি আবিষ্কৃত হয়েছে। ব্রিটেন ও মিসরের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণার মাধ্যমে এই সমাধি আবিষ্কার করা হয়। মিসরের পর্যটন ও পুরাকীর্তি মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এটি ফেরাউন দ্বিতীয় থুতমোসের সমাধি বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় এই আবিষ্কারের তথ্য প্রকাশ করে।
রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দ্বিতীয় থুতমোসের সমাধিটি রাজাদের উপত্যকা (দ্য ভ্যালি অব কিংস) এর পশ্চিমে পাওয়া গেছে। এটি মিসরের ১৮তম রাজবংশের শাসকের সমাধি। এর আগে ১৯২২ সালে রাজা তুতানখামুনের সমাধি আবিষ্কৃত হয়েছিল, যা প্রত্নতাত্ত্বিক ইতিহাসে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এরপর এই প্রথমবার কোনো রাজ সমাধি আবিষ্কৃত হলো।
সমাধির উপরে থাকা অ্যালাব্যাস্টার পাত্রের গায়ে রাজা দ্বিতীয় থুতমোস ও তার স্ত্রী রানি হাতশেপসুতের নাম খোদাই করা ছিল। এ কারণেই প্রত্নতাত্ত্বিকরা নিশ্চিত হন যে এটি দ্বিতীয় থুতমোসের সমাধি। রানি হাতশেপসুত ছিলেন মিসরের রাজবংশে শাসনক্ষমতা পাওয়া স্বল্প সংখ্যক নারীদের একজন।
মিসরের পর্যটন ও পুরাকীর্তি মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, সমাধির ভেতর থেকে রাজকীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সামগ্রীর কিছু অংশ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া নীল লিপি, হলুদ তারা এবং ধর্মীয় লেখাযুক্ত মর্টারের টুকরোও পাওয়া গেছে। তবে প্রত্নতাত্ত্বিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সমাধির বেশিরভাগ দ্রব্য স্থানান্তরিত হয়েছে।
রাজা দ্বিতীয় থুতমোসের মৃত্যুর কিছুদিন পরই ব্যাপক বন্যার কারণে সমাধিটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে সমাধির অনেক গুরুত্বপূর্ণ বস্তু নষ্ট হয়ে যায় বা স্থানান্তরিত হয়। বর্তমানে প্রত্নতাত্ত্বিকরা এসব দ্রব্য উদ্ধারের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এই আবিষ্কার মিসরের ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব গবেষণার ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন। প্রত্নতাত্ত্বিকরা আশা করছেন, এটি মিসরের প্রাচীন রাজবংশের সম্পর্কে নতুন তথ্য উন্মোচনে সহায়তা করবে।