ইসরায়েলের কাছে প্রায় ৮০০ কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রির পরিকল্পনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। জো বাইডেন প্রশাসন এ প্রস্তাবটি অনানুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসকে জানিয়েছে বলে খবর প্রকাশ করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস।
অ্যাক্সিওসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অস্ত্র বিক্রির প্রস্তাবিত প্যাকেজে যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টারের সামরিক সরঞ্জাম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এছাড়া গোলাবারুদ এবং যুদ্ধবিমান থেকে আকাশেই নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্রও তালিকায় রয়েছে। এতে ছোট ডায়ামিটার বোমা এবং ওয়্যারহেডও রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
ইসরায়েলের কাছে এই অস্ত্র বিক্রি কার্যকর করতে হলে বাইডেন প্রশাসনকে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের উভয় কক্ষের অনুমোদন নিতে হবে। এ বিষয়ে জানতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে অ্যাক্সিওস জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পরিষ্কারভাবে বলেছেন যে আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকার আইন অনুযায়ী ইসরায়েলের নিজস্ব নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়ার অধিকার রয়েছে। ইসরায়েল ইরান ও তাদের ছায়া সংগঠনগুলোর আগ্রাসন প্রতিহত করার জন্য যে পদক্ষেপ নিচ্ছে, তা যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজার সশস্ত্র সংগঠন হামাস ইসরায়েলে হামলা চালায়। এরপর থেকেই ইসরায়েল গাজায় পাল্টা আক্রমণ শুরু করে। এই যুদ্ধ ইতিমধ্যে ১৫ মাস পার হয়েছে। গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য বিভিন্ন সময়ে উদ্যোগ নেওয়া হলেও কোনো চুক্তি কার্যকর হয়নি।
এর মধ্যে ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রির এ সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে সমালোচনা দেখা দিয়েছে। অনেকেই বলছেন, গাজায় চলমান সংঘর্ষের মধ্যেই এই ধরনের অস্ত্র বিক্রি আরও সহিংসতা উসকে দিতে পারে।
আরও কয়েক দিনের মধ্যেই জো বাইডেনের মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে। আগামী ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প শপথ নেবেন। এর আগে ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ক্ষমতায় গেলে গাজা যুদ্ধ বন্ধের উদ্যোগ নেবেন।
গাজায় চলমান সংঘাতের প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের এই অস্ত্র বিক্রির পরিকল্পনা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, ইসরায়েলে পাঠানো এই অস্ত্র গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ব্যবহৃত হতে পারে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সরকার দাবি করছে, ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার নিশ্চিত করতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এখন দেখার বিষয়, কংগ্রেস এই অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দেয় কি না এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় এসে গাজা যুদ্ধ বন্ধে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেন কি না।