মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান মানবিক সংকট মোকাবিলায় একটি মানবিক চ্যানেল স্থাপনের আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, রাখাইনের সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)-এর সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষ সম্পর্কে সতর্কবার্তার প্রেক্ষাপটে সেখানে মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণে জরুরি ভিত্তিতে মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা উচিত। এতে রাখাইন থেকে রোহিঙ্গাদের নতুন করে বাস্তুচ্যুতি বন্ধ করা সম্ভব হতে পারে।
শুক্রবার (৪ এপ্রিল), থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ বিমসটেক (বঙ্গোপসাগরীয় বহুখাতীয় প্রযুক্তি ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংস্থা) শীর্ষ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ড. ইউনূস। তিনি উল্লেখ করেন, রোহিঙ্গা সংকটের দীর্ঘস্থায়ী সমাধান না হলে তা সমগ্র দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা ডেকে আনতে পারে। এজন্য বিমসটেকের উচিত রাখাইনে বিরোধপূর্ণ পক্ষগুলোর মধ্যে শান্তিপূর্ণ সংলাপ চালিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে সমাধানের পথ খোঁজা।
ড. ইউনূস আরও বলেন, মিয়ানমার সরকারকে রাখাইনে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে এবং রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসনের উপযোগী পরিবেশ তৈরি করতে আরও দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে হবে। একইসঙ্গে তিনি জানান, বাংলাদেশ ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের পৃষ্ঠপোষকতায় আয়োজিত হতে যাওয়া ‘রোহিঙ্গা মুসলিম এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি সম্পর্কিত উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলন’-এ বিমসটেক দেশগুলোর অর্থবহ অংশগ্রহণ আশা করে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই সম্মেলনে বিমসটেক সদস্য দেশগুলোর উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক অংশগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, সম্প্রতি জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বাংলাদেশ সফরকালে রোহিঙ্গাদের মর্যাদা ও নিরাপত্তাসহ মিয়ানমারে স্বেচ্ছায় ফিরে যাওয়ার অধিকারের প্রতি দৃঢ় সমর্থন জানিয়েছেন।
এই সম্মেলনে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ও বিমসটেকের শীর্ষ সম্মেলনের চেয়ারপার্সন পায়োংতার্ন সিনাওয়াত্রা, বিমসটেক মহাসচিব রাষ্ট্রদূত ইন্দ্রা মণি পান্ডে এবং সংস্থার সদস্য দেশগুলোর উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনে আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার লক্ষ্যে বহু গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে।