সিরিয়ায় সরকারবিরোধী বিদ্রোহীরা রাজধানী দামেস্কের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। রোববার (৮ ডিসেম্বর) তার দেশত্যাগের খবর জানার পরপরই রাজধানীর পরিস্থিতি নাটকীয়ভাবে পাল্টে গেছে। বিদ্রোহীরা রাজধানীতে কারফিউ ঘোষণা করেছে এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে মানুষের আনন্দ।
দামেস্কে প্রেসিডেন্ট আসাদের বাসভবনে জনতা ঢুকে পড়ে। এ সময় সেখানে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। আল-জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, জনতা বাড়ির ভেতর থেকে মূল্যবান সামগ্রী বের করে নিচ্ছে।
প্রেসিডেন্ট আসাদ দেশ ত্যাগ করলেও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মাদ আল-জালালি রাজধানীতে অবস্থান করছেন। তিনি বলেছেন, “জনগণের নির্বাচিত নেতৃত্বকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।”
বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে দামেস্কে জনগণের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা গেছে। ইদলিব, হামা, হোমস, দামেস্ক এবং ডেরা পর্যন্ত বিভিন্ন অঞ্চলে মানুষের আনন্দ উদযাপন ছড়িয়ে পড়েছে। আল-জাজিরার সাংবাদিক জানিয়েছেন, দীর্ঘ ১৪ বছর পর অনেক মানুষ তাদের বাড়িতে ফিরে যাচ্ছেন এবং রাস্তায় যান চলাচল শুরু হয়েছে।
বিদ্রোহীরা দখল নেওয়ার পর দেশটির বিভিন্ন কারাগার থেকে বন্দীদের মুক্তি দিচ্ছে। ‘সাইদনায়া’ কারাগার, যা ‘মানব কসাইখানা’ নামে পরিচিত, সেখান থেকেও বন্দীদের মুক্ত করার খবর পাওয়া গেছে। এই কারাগারে হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।
বিদ্রোহীরা রাজধানী দামেস্কে কারফিউ ঘোষণা করেছে। আজ বিকেল ৪টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত এই কারফিউ কার্যকর থাকবে।
আল-জাজিরার সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, দামেস্কের মহাসড়কগুলোতে মানুষের ভিড় দেখা যাচ্ছে। অনেকে কারাগারে আটক তাদের প্রিয়জনদের খুঁজছেন। বিদ্রোহীদের এই সাফল্যকে সিরিয়ার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
সিরিয়ার রাজনৈতিক পরিস্থিতি এক নতুন মোড় নিয়েছে। প্রেসিডেন্ট আসাদের দেশত্যাগ এবং বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে জনগণের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে। তবে দেশটি কীভাবে এই পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নেবে, তা সময়ই বলে দেবে।