বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে ক্রিকেট কেবল একটি খেলা নয়, বরং আবেগ ও ভালোবাসার অংশ। এই দেশগুলো নিজেদের ঘরে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ আয়োজনের পাশাপাশি আইসিসির বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট আয়োজনের জন্যও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। ভারত ও বাংলাদেশ তুলনামূলকভাবে এগিয়ে থাকলেও পাকিস্তান দীর্ঘদিন পিছিয়ে ছিল।
শেষবার পাকিস্তানে আইসিসির কোনো বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট হয়েছিল ১৯৯৬ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ, যা তারা ভারতের সঙ্গে যৌথভাবে আয়োজন করেছিল। এরপর ২০০৮ সালে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আয়োজনের সুযোগ পেলেও নিরাপত্তা শঙ্কায় তা বাতিল হয়ে যায়।
অবশেষে ২৯ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে ২০২৫ সালে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আয়োজনের সুযোগ পেয়েছে পাকিস্তান। তবে নিরাপত্তা ইস্যু এবং ভারতের আপত্তির কারণে এবারও টুর্নামেন্টটি সম্পূর্ণ পাকিস্তানে হচ্ছে না, বরং এটি হবে হাইব্রিড মডেলে।
২০০৮ সালে পাকিস্তানে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আয়োজনের কথা ছিল। সবকিছু প্রস্তুত থাকলেও দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড নিরাপত্তার ঝুঁকির কথা বলে পাকিস্তানে খেলতে যেতে রাজি হয়নি। ফলে আইসিসি বাধ্য হয়ে আসরটি বাতিল করে এবং পরে দক্ষিণ আফ্রিকায় আয়োজন করে।
২০০৮ সালের পর নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় পাকিস্তানে দীর্ঘদিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট হয়নি। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ধীরে ধীরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফিরেছে। ২০২৩ সালের এশিয়া কাপের কিছু ম্যাচ আয়োজনের মাধ্যমে পাকিস্তান আবারও বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট আয়োজনের পথে এগিয়েছে। এবার চ্যাম্পিয়নস ট্রফি সফলভাবে আয়োজন করতে পারলে আইসিসির আরও বড় ইভেন্ট আয়োজনের সুযোগ পাবে পাকিস্তান।
ভারত এবার চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলতে পাকিস্তান যাচ্ছে না, যা টুর্নামেন্টের আকর্ষণ কিছুটা কমিয়ে দেবে। তবে পাকিস্তান এই টুর্নামেন্ট সফলভাবে আয়োজন করতে চায়, যাতে ভবিষ্যতে তারা আরও বড় ইভেন্ট আয়োজনের স্বীকৃতি পায়।
এ জন্য তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। শহরজুড়ে নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা হয়েছে, স্টেডিয়াম ও টিম হোটেলের নিরাপত্তাও সর্বোচ্চ পর্যায়ে রাখা হয়েছে।
চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ২০২৫ পাকিস্তানের জন্য শুধু একটি টুর্নামেন্ট নয়, বরং এটি তাদের ক্রিকেট সক্ষমতার পরীক্ষা। সফলভাবে আয়োজন করতে পারলে পাকিস্তানে ক্রিকেট আয়োজনের নতুন যুগের সূচনা হতে পারে। এখন দেখার বিষয়, কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে পাকিস্তান কতটা সফলভাবে এই টুর্নামেন্ট সম্পন্ন করতে পারে।