
দীর্ঘ প্রায় দুই দশক অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে ২৭তম বিসিএস পরীক্ষা-২০০৫-এর নিয়োগবঞ্চিত ৬৭৩ জন প্রার্থীকে নিয়োগ দিয়ে গেজেট প্রকাশ করেছে সরকার। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নব নিয়োগ শাখা থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) ৫ নভেম্বরের সুপারিশের ভিত্তিতে প্রথম পর্যায়ে ৬৭৩ জন প্রার্থীকে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) বিভিন্ন ক্যাডারের প্রবেশ পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তারা জাতীয় বেতনস্কেল ২০১৫ অনুযায়ী ২২,০০০ টাকা থেকে ৫৩,০৬০ টাকা বেতনক্রমে চাকরিতে যোগদান করবেন।
নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে প্রশাসন ক্যাডারে ৯০ জন, পুলিশ ক্যাডারে ৭০ জন, অডিট ক্যাডারে ৫ জন, আনসার ক্যাডারে ১ জন, কর ক্যাডারে ১ জন, সমবায় ক্যাডারে ৫ জন, খাদ্য ক্যাডারে ২ জনসহ অন্যান্য ক্যাডারের প্রার্থীরাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, নিয়োগপ্রাপ্তদের বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (বিপিএটিসি) অথবা সরকার নির্ধারিত প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা বাধ্যতামূলক। বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ শেষে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে দায়িত্ব পালনের জন্য প্রয়োজনীয় পেশাগত ও বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে।
নিয়োগের শর্ত অনুযায়ী, প্রত্যেককে ২ বছর শিক্ষানবিশকাল সম্পন্ন করতে হবে। প্রয়োজনে সরকার এই শিক্ষানবিশকাল অনূর্ধ্ব দুই বছর পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে পারবে। শিক্ষানবিশকালে কোনো কর্মকর্তা চাকরিতে বহাল থাকার অনুপযুক্ত বিবেচিত হলে, কারণ দর্শানো ছাড়াই এবং পিএসসির সঙ্গে পরামর্শ ব্যতিরেকে তাকে চাকরি থেকে অপসারণ করা যেতে পারে।
এছাড়া, শিক্ষানবিশকাল ও প্রশিক্ষণ সফলভাবে সম্পন্ন করা, বিভাগীয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া এবং শিক্ষানবিশকাল সন্তোষজনকভাবে অতিক্রান্ত হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে চাকরিতে স্থায়ী করা হবে। প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে একটি অঙ্গীকারনামা দাখিল করাও বাধ্যতামূলক।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, নিয়োগপ্রাপ্তদের ৩০০ টাকা মূল্যের নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে একজন জামানতদারসহ একটি বন্ড সম্পাদন করতে হবে। যদি কেউ শিক্ষানবিশকালে বা শিক্ষানবিশকাল উত্তীর্ণ হওয়ার তিন বছরের মধ্যে চাকরি থেকে ইস্তফা দেন, তবে প্রশিক্ষণকালীন বেতন-ভাতা, ভ্রমণভাতা ও প্রশিক্ষণ বাবদ ব্যয়িত সকল অর্থ সরকারকে ফেরত দিতে বাধ্য থাকবেন।
আরও বলা হয়, ইস্তফা দেওয়ার আগে কর্তব্যকাজে অনুপস্থিত থাকলে সরকারি পাওনা বিধি অনুযায়ী আদায় করা হবে এবং সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ অনুসারে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নিয়োগপ্রাপ্তদের জ্যেষ্ঠতা সংরক্ষণের স্বার্থে, তাদের ব্যাচের প্রথম নিয়োগ প্রজ্ঞাপন যে তারিখে জারি হয়েছিল, সেই তারিখ থেকেই ভূতাপেক্ষিকভাবে নিয়োগ কার্যকর হবে। তবে এর ফলে তারা কোনো বকেয়া আর্থিক সুবিধা পাবেন না।