রোহিঙ্গা সংকট সমাধান না হলে মিয়ানমারে কখনোই স্থায়ী শান্তি ফিরবে না—এমনই শক্ত বার্তা দিয়েছে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ বিষয়ে সরাসরি মত প্রকাশ করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, “আমরা এখন এমন এক বাস্তবতায় আছি, যেখানে নতুন প্রতিবেশী হয়ে উঠেছে কিছু নন-স্টেট অ্যাক্টর, যেমন আরাকান আর্মি।”
শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) ফরেন সার্ভিস দিবস উপলক্ষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দুই শীর্ষ কর্মকর্তা— নিকোল এন. চুলিক, ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি (দক্ষিণ ও সেন্ট্রাল এশিয়া ব্যুরো), এন্ড্রু হেরাপ, ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি (পূর্ব ও প্যাসিফিক ব্যুরো)।
তারা ঢাকায় এসে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন মিয়ানমারে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতও।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “রোহিঙ্গা সংকটের বড় বাধা হচ্ছে আরাকান আর্মি। তারা রাষ্ট্রীয় স্বীকৃত নয়, আবার তাদের উপেক্ষাও করা যাচ্ছে না। এ কারণেই সংকট সমাধান কঠিন হয়ে পড়েছে।”
তিনি বলেন, “আমরা এখন এমন একটি পরিস্থিতিতে রয়েছি, যেখানে তাদের সঙ্গে সরাসরি আচরণ করাও সম্ভব নয়, আবার অগ্রাহ্যও করা যাচ্ছে না।”
তৌহিদ হোসেন আরও বলেন, “আমি মার্কিন প্রতিনিধিদের বলেছি, যখন সময় আসবে, তখন বন্ধুদেশগুলোকে কার্যকর চাপ প্রয়োগ করতে হবে। যাতে করে মিয়ানমারে যারা ক্ষমতায় আসবে, তারা রোহিঙ্গাদের অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তাদের ফেরত নেয়।”
বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, শুল্ক নীতি এবং সেবা খাত নিয়েও আলোচনা হয়। উপদেষ্টা জানান, “আমরা বাণিজ্য বাধা কমানোর চেষ্টা করছি। অনেকেই বলে যে, আমাদের মধ্যে বিশাল পার্থক্য—কিন্তু আমরা সেবা খাতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে অনেক কিছু আমদানি করি। এতে বৈষম্য কিছুটা ভারসাম্য পাচ্ছে।”