ইরানের বন্দর আব্বাসের শহিদ রাজি বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০ জনে। আহত হয়েছেন এক হাজার ২০০ জনেরও বেশি। গত শনিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে ইরান ইন্টারন্যাশনাল।
তেহরানের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সেরাজ বিস্ফোরণের জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করেছেন। তার দাবি, “পূর্ব পরিকল্পিতভাবে কনটেইনারে বিস্ফোরক রাখা হয়েছিল এবং দূর থেকে স্যাটেলাইট বা টাইমারের মাধ্যমে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। এটি কোনো দুর্ঘটনা নয়।”
অন্যদিকে, ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইস্কান্দর মোমেনি জানিয়েছেন, “দুপুর ১২টা ৪ মিনিটে ছোট একটি আগুনের সূত্রপাত ঘটে। এরপর এক মিনিটের মধ্যে ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে এবং বিস্ফোরণ ঘটে। তবে এখনো নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি কীভাবে আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল।”
ইরানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার মুখপাত্র হোসেন জাফারি জানিয়েছেন, “এখন পর্যন্ত নাশকতার কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। কনটেইনারের ভেতরে থাকা রাসায়নিক পদার্থ থেকেই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।”
তিনি আরও বলেন, বিষাক্ত ধোঁয়ার কারণে উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হচ্ছে এবং বিস্ফোরণের শক্তি এত বেশি ছিল যে, প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূর থেকেও তা অনুভূত হয়েছে।
ওয়াশিংটন ইনস্টিটিউটের সিনিয়র প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক ফারজিন নাদিমি জানান, “নাশকতার সম্ভাবনাকে এখনই পুরোপুরি উড়িয়ে দেওয়া ঠিক হবে না।”
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিস্ফোরণের ফলে আশপাশের ভবনের ছাদ ও জানালা ভেঙে পড়েছে, পুড়ে গেছে গাড়ি এবং দূরবর্তী বাসিন্দারাও কম্পন অনুভব করেছেন।
ইরানি সরকারি বার্তা সংস্থা ইরনা জানিয়েছে, শহিদ রাজি বন্দর ইরানের অন্যতম আধুনিক সামুদ্রিক বন্দর। এটি হরমুজ প্রণালির কাছে অবস্থিত, যেখান দিয়ে বিশ্বের মোট উৎপাদিত তেলের প্রায় ২০ শতাংশ পরিবাহিত হয়। ফলে এই বন্দরের নিরাপত্তা ইরানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।