সরকারি কাজে দেশের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং উপমন্ত্রীরা নিয়মিতভাবে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ভ্রমণ করে থাকেন। এসব ভ্রমণের ব্যয় নির্বাহের জন্য সরকার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মন্ত্রী বিষয়ক ইউনিটে অর্থ বরাদ্দ দিয়ে থাকে। তবে বরাদ্দকৃত অর্থ সঠিকভাবে পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল বাধ্যতামূলক। এই লক্ষ্যেই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সম্প্রতি একটি পরিপত্র জারি করেছে, যেখানে বলা হয়েছে— ভ্রমণ খাতে অর্থ বরাদ্দ পেতে সাতটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত পূরণ করতে হবে।
পরিপত্র অনুযায়ী, প্রথম শর্তে বলা হয়েছে, ভ্রমণকারীর স্বাক্ষর ও সিলসহ বিল তৈরি করতে হবে এবং এর সঙ্গে বেশ কিছু প্রমাণপত্র সংযুক্ত করতে হবে। যেমন, বৈদেশিক ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারপ্রধানের অনুমোদিত সারসংক্ষেপ, পরিবহনের টিকিট ও ভাড়ার বিবরণ, অনুমোদিত ভ্রমণসূচি, হোটেল বিলের কপি, বৈদেশিক মুদ্রায় খরচ হলে বিনিময় হারের হিসাব এবং অন্যান্য ব্যয়ের প্রমাণপত্র।
দ্বিতীয় শর্তে বলা হয়েছে, অনুমোদিত সময়ের চেয়ে বেশি সময় ভ্রমণ করলে পুনরায় অনুমোদন নিতে হবে। তৃতীয়ত, যদি অগ্রিম বরাদ্দ ৭ লাখ টাকার বেশি হয়, তবে অর্থ বিভাগের অনুমতি ছাড়া তা অনুমোদনযোগ্য নয়। চতুর্থত, অগ্রিম অর্থ নিয়ে ভ্রমণের পর এক মাসের মধ্যে বিল সমন্বয় না করলে ভবিষ্যতে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হবে না।
পঞ্চম শর্তে উল্লেখ করা হয়েছে, অগ্রিম বরাদ্দের ক্ষেত্রে যথাযথ সময় হাতে রেখে বিল দাখিল করতে হবে যাতে নথিপত্র প্রক্রিয়াজাতকরণ ও অর্থ ছাড় সহজ হয়। ষষ্ঠত, প্রতিটি বিল তিনটি সেটে দাখিল করতে হবে— মূল কপিসহ। সপ্তম ও শেষ শর্ত হলো, দাখিলকৃত সব ফটোকপি অবশ্যই সত্যায়িত হতে হবে।
এই সাতটি শর্ত কার্যকরভাবে পালন করলে মন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা সরকারি ভ্রমণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ সুষ্ঠুভাবে গ্রহণ করতে পারবেন। এছাড়া, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ আশা করছে, এসব নিয়ম অনুসরণে সরকারি অর্থব্যবস্থায় স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং দক্ষতা বাড়বে।
এই নির্দেশনা সরকারের অভ্যন্তরীণ ব্যয় ব্যবস্থাপনায় আরও শৃঙ্খলা আনবে বলেই মনে করছেন প্রশাসনিক বিশেষজ্ঞরা। অনেক সময় দেখা যায়, যথাযথ কাগজপত্র না থাকায় ভ্রমণসংক্রান্ত বিল বাতিল হয় বা বিলম্বিত হয়। এই নতুন নির্দেশিকা সেই সমস্যা দূর করবে এবং প্রশাসনিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে।