1. hmonir19799@gmail.com : Hossain Monir : Hossain Monir
  2. rtbdnews@gmail.com : RT BD NEWS : RT BD NEWS
  3. info@www.rtbdnews.com : RT BD NEWS :
বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:৪০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
ক্যাচ মিসে বাংলাদেশকে ডুবালেন নুরুল হাসান, সুপার ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয় কানপুরে ‘আই লাভ মুহাম্মদ’ সাইনবোর্ড ঘিরে উত্তেজনা, নয় মুসলিমের বিরুদ্ধে মামলা ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য ভাঙার ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সতর্ক থাকার আহ্বান মাসুদ সাঈদীর ভারত যেন বাংলাদেশের জলসীমায় মাছ না ধরে কাউখালীতে ওয়ারেন্টভুক্ত দুর্ধর্ষ মাদক সম্রাট পারভেজ মহাজন গ্রেফতার পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনায় ভারতের ভূমিকা নেই: ইয়াকুব মুজাহিদ ঝিনাইদহে ৭ দফা দাবিতে সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মচারীদের মানববন্ধন পিরোজপুরে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বিশ্ব ও জাতীয় পরিসংখ্যান দিবস উদযাপন ঝিনাইদহে বিশ্ব ও জাতীয় পরিসংখ্যান দিবস পালিত পিরোজপুরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে ছাই ৫টি দোকান

সাত হাজার বছর আগের এক সমুদ্রকন্যার নিঃশব্দ প্রত্যাবর্তন

ধ্রব রহমান
  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৮ মে, ২০২৫
সাত হাজার বছর আগের এক সমুদ্রকন্যার নিঃশব্দ প্রত্যাবর্তন

যখন আধুনিক সভ্যতা প্রযুক্তির সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছেছে, তখন ইতিহাস আমাদের ফিরিয়ে নিয়ে যায় হাজার বছর পেছনে—এক নারীকে কেন্দ্র করে, যিনি সময়ের অতল গর্ভে থেকেও হারিয়ে যাননি। তার কোনো নাম নেই, কোনো ভাষ্য নেই। তবুও ইতিহাস তাকে চিনেছে, সম্মান দিয়েছে ‘টাইব্রিন্ড নারী’ নামে।

১৯৯০-এর দশকে ডেনমার্কের দক্ষিণে সমুদ্রতীরবর্তী Tybrind Vig এলাকায় প্রত্নতত্ত্ববিদরা সমুদ্রের নিচে ডুবে থাকা একটি প্রাচীন বসতিস্থান আবিষ্কার করেন। সেখানে একটি নারীর প্রায় অক্ষত কঙ্কাল খুঁজে পান তারা। আধুনিক বিশ্লেষণে জানা যায়, কঙ্কালটি প্রায় ৭,০০০ বছর পুরনো, মধ্য-পাথর যুগের।

বিজ্ঞানীরা বিস্মিত হন—এত দীর্ঘ সময় ধরে পানির নিচে থেকেও কঙ্কালটি এত ভালোভাবে সংরক্ষিত! যেন কেউ ঘুমিয়ে ছিলেন, কেবল এই সভ্যতার কাছে ফিরে আসার অপেক্ষায়।

টাইব্রিন্ড নারী ছিলেন শিকারি ও সংগ্রাহক সমাজের একজন সদস্য। বিজ্ঞানীরা হাড় ও দাঁতের রাসায়নিক বিশ্লেষণ করে জানান, তিনি প্রধানত সামুদ্রিক মাছ ও ঝিনুক খেতেন। বন থেকে সংগ্রহ করতেন ফল-মূল ও বাদাম। তার জীবন প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল ছিল—যেখানে আধুনিকতার কোনো ছোঁয়া ছিল না, কিন্তু ছিল স্বাভাবিকতা, ছন্দ, ও সহাবস্থানের সৌন্দর্য।

ফরেনসিক অ্যান্থ্রোপোলজি ও ৩ডি রিকনস্ট্রাকশন প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা টাইব্রিন্ড নারীর মুখাবয়ব পুনর্গঠন করেন। আজ ডেনমার্কের Moesgaard Museum-এ দর্শনার্থীরা দেখতে পান সেই নারীকে—যিনি একাধারে একজন মেয়ে, মা, সংগ্রামী ও সময়ের সাক্ষী।

যদিও তার DNA পুরোপুরি সংরক্ষিত ছিল না, তথাপি বিজ্ঞানীরা তার খাদ্যাভ্যাস, স্বাস্থ্য এবং দৈহিক গঠন সম্পর্কে ধারণা পান। উচ্চ প্রোটিনযুক্ত সামুদ্রিক খাবার ছিল তার জীবনের একটি বড় অংশ।

টাইব্রিন্ড নারী শুধু একটি প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কার নয়; তিনি নারী ইতিহাসের এক মূর্ত প্রতীক। এক সময় যখন নারী পুরুষ উভয়েই সমানভাবে প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করে জীবন গড়তেন, তখন টাইব্রিন্ড নারী ছিলেন এক সাহসী প্রতিনিধি।

তার অস্তিত্ব আমাদের মনে করিয়ে দেয়—নারী চিরকালই সমাজের মূল ভিত্তির অংশ ছিলেন, যতই সময় বদলাক, প্রযুক্তি আসুক।

আজ, যখন আমরা উন্নত সমাজ গড়ার কথা বলি, তখন টাইব্রিন্ড নারী আমাদের মনে করিয়ে দেন আমাদের শিকড়, ইতিহাস, এবং সেই সময়ের মানুষদের সঙ্গে আমাদের অদৃশ্য কিন্তু গভীর এক সম্পর্কের কথা।

৭ হাজার বছর আগের এই ‘সমুদ্রকন্যা’ যেন ইতিহাসের নিঃশব্দ এক কণ্ঠস্বর, যিনি আধুনিক সভ্যতার কানে ফিসফিসিয়ে বলেন—”আমরা ছিলাম, আমরা আছি, আমরা কখনও হারাই না।”

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 𝑹𝑻 𝑩𝑫 𝑵𝑬𝑾𝑺 আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট