আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) চার বিচারকের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা জারির ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। একই সঙ্গে আদালতের স্বাধীনতা ও কার্যক্রমে ‘সম্পূর্ণ সমর্থন’ প্রদানের অঙ্গীকার করেছে সংস্থাটি। খবর আল জাজিরার।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বৃহস্পতিবার (৫ জুন) ঘোষণা দেন যে, গাজায় যুদ্ধাপরাধে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাদের বিরুদ্ধে তদন্তের প্রতিক্রিয়ায় আইসিসির চার বিচারকের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
যেসব বিচারক নিষেধাজ্ঞার শিকার, সোলোমি বালুঙ্গি বোসা (উগান্ডা), লুজ দেল কারমেন ইবানেজ কারানজা (পেরু), সোফি আলাপিনি গ্যানসো (বেনিন), বেটি হোহলার (স্লোভেনিয়া)।
আইসিসি একে তাদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ হিসেবে আখ্যায়িত করে জানায়, এই আদালত লাখো নির্যাতিত মানুষের জন্য ন্যায়বিচারের প্রতীক।
ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেইন বলেন, “আইসিসির স্বাধীনতা রক্ষা করতে হবে। এই আদালত গুরুতর অপরাধের বিচার করে এবং ভুক্তভোগীদের কণ্ঠস্বর তুলে ধরে।”
জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার টুর্ক বলেন, “বিচারকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আইনের শাসনের পরিপন্থী। আমি এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আহ্বান জানাচ্ছি।”
ইইউ কাউন্সিল প্রেসিডেন্ট আন্তোনিও কস্তা আইসিসিকে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচারের ‘ভিত্তিপ্রস্তর’ হিসেবে উল্লেখ করেন এবং আদালতের স্বাধীনতা রক্ষার আহ্বান জানান।
২০১৮ সাল থেকে বিচারক বোসা ও ইবানেজ আইসিসিতে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০২০ সালে তারা আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাদের বিরুদ্ধে তদন্ত অনুমোদনে ভূমিকা রাখেন।
পরে ২০২১ সালে আদালত তালেবান ও আফগান বাহিনীর অপরাধের ওপর গুরুত্ব দেয়।
২০২৩ সালের নভেম্বরে আইসিসি বিচারকরা নেতানিয়াহু, সাবেক প্রতিরক্ষাপ্রধান গ্যালান্ট এবং হামাস নেতা ইব্রাহিম আল মাসরির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। মার্কো রুবিও দাবি করেন, বিচারক গ্যানসো ও হোহলার এ সিদ্ধান্তে অংশ নিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালেও ট্রাম্প প্রশাসন আফগানিস্তান ইস্যুতে তৎকালীন প্রধান কৌঁসুলি ফাতু বেনসৌদার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল।
চলতি বছরের শুরুতে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদ আইসিসির বিরুদ্ধে আরও শাস্তিমূলক পদক্ষেপের পক্ষে ভোট দেয়, বিশেষ করে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে পরোয়ানার প্রতিবাদে।